শনিবার, ১ নভেম্বর ২০২৫, ১৭ কার্তিক ১৪৩২

রংপুরে গরুর ‘আবাসিক হোটেল’: দিনে ৪০ টাকায় রয়েছে গরু রাখার ব্যবস্থা

নিউজফ্ল্যাশ ডেস্ক | প্রকাশিত: ১ নভেম্বর ২০২৫, ১৪:৪০

ছবি: সংগৃহীত

বিভাগীয় নগরী রংপুরের প্রবেশদ্বার মডার্ন মোড়ের ধর্মদাস এলাকায় ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে তোলা হয়েছে গরু রাখার “আবাসিক হোটেল”। দিনে মাত্র ৪০ টাকা ভাড়ায় সেখানে গরু রেখে যেতে পারছেন ব্যবসায়ী ও খামারিরা। প্রায় ৪০০ গরু ধারণক্ষমতার এই হোটেল ইতোমধ্যেই উত্তরাঞ্চলে সাড়া ফেলেছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে গরু বিক্রির উদ্দেশ্যে রংপুরে আসেন ব্যবসায়ী ও খামারিরা। আগে গরু রাখার নির্দিষ্ট কোনো জায়গা না থাকায় নিরাপত্তা ও খাবারের সমস্যা নিয়ে বিপাকে পড়তে হতো তাদের। এসব সমস্যা সমাধানেই স্থানীয় উদ্যোক্তা আলমগীর হোসেনের উদ্যোগে গড়ে তোলা হয় গরুর জন্য এই বিশেষ আবাসিক হোটেল।

হোটেলের মালিক আলমগীর হোসেন জানান, প্রতিটি গরুর জন্য দৈনিক ৪০ টাকা ভাড়া নেওয়া হয়। গরুর খাবারের ব্যবস্থা মালিককেই করতে হয়, তবে প্রয়োজনে হোটেলের কর্মচারীরা খাবার সরবরাহ করে দেন। হোটেলটি পরিচ্ছন্ন রাখা এবং পশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই তাদের প্রধান দায়িত্ব।

চট্টগ্রাম থেকে গরু কিনতে আসা ব্যবসায়ী সালাম সরকার বলেন,

“আগে রংপুরে গরু কিনে রাখার জায়গা না থাকায় নানান সমস্যায় পড়তে হতো। এখন আবাসিক হোটেল থাকায় নিশ্চিন্তে গরু রেখে যেতে পারি। এটা আমাদের জন্য আশীর্বাদ।”

একই অভিজ্ঞতা জানালেন কুমিল্লার আখতার হোসেন, বরিশালের মমতাজ উদ্দিন এবং কক্সবাজারের আবদুল্লাহ মিয়া। তারা বলেন, আগে গরু ছিনতাই, খাবারের অভাবসহ নানা ঝামেলা ছিল; এখন নিরাপদ ও সুবিধাজনক ব্যবস্থা হওয়ায় দুশ্চিন্তা দূর হয়েছে।

বর্তমানে হোটেলে পাঁচজন কর্মচারী কাজ করেন, যারা পরিচ্ছন্নতা ও গোখাদ্যের ব্যবস্থা দেখভাল করেন। হোটেল কর্মচারী রহিম মিয়া জানান,

“এখান থেকে প্রতিদিন প্রায় ৫০০ টাকা আয় হয়। এতে সংসারের অভাব কিছুটা হলেও কমেছে।”

গরুর খাবার বিক্রির মাধ্যমে অন্তত ২০ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে বলেও জানান স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।

আলমগীর হোসেন জানান, ১০ লাখ টাকা অগ্রিম দিয়ে জমি ভাড়া নিয়ে তিনি এই উদ্যোগ শুরু করেছেন। বর্তমানে ৩০০ গরু রাখার ব্যবস্থা থাকলেও ভবিষ্যতে এক হাজার গরু ধারণক্ষমতা সম্পন্ন হোটেল নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।

রংপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সিরাজুল হক বলেন,

“গরুর আবাসিক হোটেল নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এতে ব্যবসায়ী ও খামারিদের সুবিধা যেমন হচ্ছে, তেমনি কর্মসংস্থানও তৈরি হয়েছে। এ ধরনের উদ্যোগ উত্তরাঞ্চলের পশুপালন খাতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।”



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top