খুলনায় ঘের ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা আদায়ের অভিযোগে এসআই পলাশের বিরুদ্ধে
নিউজফ্ল্যাশ ডেস্ক | প্রকাশিত: ৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৪:৩৫
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) খালিশপুর থানার এসআই পলাশের বিরুদ্ধে ঘের ব্যবসায়ীর কাছ থেকে জোরপূর্বক টাকা আদায় ও মামলার ভয় দেখানোর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এবং নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি একটি ওয়ারেন্টভুক্ত মামলায় অভিযুক্ত সারোয়ারের ছেলে লিটনকে টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেন এসআই পলাশ। তবে পরবর্তীতে আবারও তাকে আটক করে মাদক মামলায় জড়ানোর চেষ্টা করেন তিনি।
একই সঙ্গে ঘের ব্যবসায়ী মেহেদী হাসানকে ফোনে হুমকি দিয়ে বলা হয়— “তোমার বিরুদ্ধেও মাদক মামলা দেওয়া হবে।” এ সংক্রান্ত একটি কল রেকর্ড প্রতিবেদকের হাতে এসেছে, যেখানে শোনা যায় মেহেদী হাসান বারবার বলছেন, “স্যার, আমার নামে তো কোনো মাদক মামলা নেই…” কিন্তু এসআই পলাশ কথার মাঝেই ফোন কেটে দেন।
মেহেদী হাসান বলেন, “আমি একজন ঘের ব্যবসায়ী। আমার বিরুদ্ধে কোনো মাদক মামলা নেই। সম্প্রতি আমার বাড়িতে দুর্বৃত্তরা ৯ রাউন্ড গুলি চালায়। সেই ঘটনার ন্যায়বিচার চাইতেই এখন পুলিশ আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।”
গ্রেপ্তার লিটনের স্ত্রী রেহেনা বেগম অভিযোগ করে বলেন, “আমার স্বামী বাচ্চাদের জন্য খাবার কিনতে গিয়েছিল। সেখান থেকে ধরে নিয়ে যায়। পরে থানায় গেলে জানানো হয়, সে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি। তার কাছে থাকা ২০ হাজার টাকা এসআই পলাশ নিয়ে নেয়। মোটরসাইকেল ও মোবাইল আনতে গেলে বলে, চাবি নিতে হলে আরও ২০ হাজার টাকা দিতে হবে। রাতে ১২টা পর্যন্ত থানার সামনে বসিয়ে রেখেছিল, টাকার জন্য ঘুরেছি—আমার সঙ্গে কুকুরের মতো ব্যবহার করেছে।”
তিনি আরও জানান, এসআই পলাশ হুমকি দিয়েছেন—“এই টাকা নেওয়ার কথা যদি কাউকে বলো, তাহলে লিটনকে পুরনো মামলায় আসামি বানিয়ে জেলে পাঠাবো।”
স্থানীয় এলাকাবাসীর দাবি, মেহেদী হাসানকে ভয়ভীতি দেখিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। তাদের মতে, “যে পুলিশ জনগণের নিরাপত্তা দেবে, তারা যদি অন্যায়ভাবে কাউকে ফাঁসানোর চেষ্টা করে, তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে?”
এ বিষয়ে খালিশপুর থানার এসআই পলাশের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
খালিশপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর আতাহার আলী বলেন, “একজন ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানা আছে। তবে কাউকে মাদক মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ সম্পর্কে আমার জানা নেই।”
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, “অভিযোগ পাওয়া গেলে বিষয়টি তদন্ত করে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট সদস্যের চাকরি পর্যন্ত চলে যেতে পারে। পুলিশ বাহিনীতে শৃঙ্খলাভঙ্গের ক্ষেত্রে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে, কোনো অনিয়ম বা অপব্যবহার বরদাস্ত করা হবে না।”
নাগরিক সমাজ ও মানবাধিকার কর্মীরা ঘটনার বস্তুনিষ্ঠ তদন্ত এবং অভিযুক্ত এসআই পলাশের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
বিষয়:

পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।