সমুদ্রকন্যা কুয়াকাটা: একই স্থানে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের অপূর্ব সৌন্দর্য
নিউজ ডেস্ক | প্রকাশিত: ৭ নভেম্বর ২০২৫, ১৪:২০
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের পর্যটন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান কুয়াকাটা, যা “সমুদ্রকন্যা” নামে খ্যাত। ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সমুদ্রসৈকতের অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো এখান থেকে একসাথে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের দৃশ্য উপভোগ করা যায়—যা পৃথিবীর খুব কম সৈকতেই সম্ভব।
ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, ১৮ শতকে আরাকানবাসীরা এ অঞ্চলে বসতি স্থাপন করলে বিশুদ্ধ পানির অভাবে তারা অসংখ্য কুয়া খনন করেন। সেখান থেকেই এ স্থানের নামকরণ হয় “কুয়াকাটা”।
ধর্মীয়ভাবেও কুয়াকাটা একটি গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থান। হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা প্রতি বছর রাস পূর্ণিমা ও মাঘী পূর্ণিমায় এখানে সমবেত হন। তারা সমুদ্রে পবিত্র স্নান করেন এবং ঐতিহ্যবাহী মেলায় অংশ নেন।
ঢাকা থেকে কুয়াকাটার দূরত্ব প্রায় ৩৮০ কিলোমিটার। রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থান থেকে এসি ও নন-এসি বাস সার্ভিস চালু আছে। এছাড়া ব্যক্তিগত যানবাহনেও সহজে যাওয়া সম্ভব।
থাকার জন্য রয়েছে পর্যটন কর্পোরেশনের রিসোর্ট ও বিভিন্ন মানের হোটেল। আগাম বুকিং সুবিধাও রয়েছে অনলাইনে। খাবারের তালিকায় দেশীয় খাবারের পাশাপাশি সমুদ্রের তাজা মাছের ভাজা বেশ জনপ্রিয়—বিশেষ করে যারা সামুদ্রিক খাবারের ভক্ত, তাদের জন্য এটি এক স্বর্গ।
কুয়াকাটার কাছেই সীমাবদ্ধ বিহার অবস্থিত, যেখানে প্রায় ৩৭ মন ওজনের অষ্টধাতুর তৈরি ধ্যানমগ্ন বুদ্ধ মূর্তি দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে। এর পাশেই রয়েছে প্রাচীন এক কুয়া। কেরানি পাড়া ও সীমা বৌদ্ধবিহারের পার্শ্ববর্তী এলাকায় গড়ে উঠেছে রাখাইন আদিবাসীদের বুদ্ধ পল্লী, যেখানে তাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি কাছ থেকে দেখা যায়।
এছাড়া আলিপুর মহিপুর বন্দর দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম বড় মৎস্য বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। মিশ্র পাড়ার বৌদ্ধবিহারে রয়েছে উপমহাদেশের অন্যতম বৃহৎ বুদ্ধমূর্তি।
কুয়াকাটার সৌন্দর্য শুধু সৈকতে সীমাবদ্ধ নয়। আশপাশের গঙ্গামতি জঙ্গল, ফাতরার বন, লাল কাঁকড়ায় ভরা উপকূল এবং নীল সমুদ্রের ঢেউ মিলিয়ে গড়ে উঠেছে এক অপূর্ব প্রাকৃতিক স্বর্গরাজ্য।
নিফ্লা৭১/ওতু
বিষয়:

পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।