পাহাড়, হ্রদ আর শান্তির শহর রাঙামাটি
নিউজ ডেস্ক | প্রকাশিত: ৯ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০০
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত দেশের সবচেয়ে বড় জেলা রাঙামাটি—এক শান্ত, মনোরম ও হৃদয় ছোঁয়া শহর। পাহাড়, ঝরনা আর নীল হ্রদের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা এই জেলার সৌন্দর্য মুগ্ধ করে যে কাউকে। তাই ভ্রমণপ্রেমীদের তালিকায় রাঙামাটির নাম থাকে সবার আগে।
এখানে বসবাস করে এগারোটি ভাষাভাষী আদিবাসী গোষ্ঠী, যারা তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও জীবনধারায় অভ্যস্ত। পাহাড়ের ফাঁকে ফাঁকে ছড়িয়ে থাকা ছোট ছোট দ্বীপে তাদের বসবাস, যা রাঙামাটির আকর্ষণ আরও বাড়িয়ে দেয়।
রাজধানী ঢাকা থেকে রাঙামাটির দূরত্ব প্রায় ৩০৬ কিলোমিটার। যেতে পারেন নন-এসি বা এসি বাসে; ভাড়ার পরিমাণ ৮৪০ থেকে ১৮০০ টাকা পর্যন্ত। যাত্রায় সময় লাগে আনুমানিক ৭ ঘণ্টা, যদিও তা রাস্তার পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে।
রাঙামাটির সবচেয়ে জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান কাপ্তাই হ্রদ, যা ১৯৫৬ সালে নির্মিত একটি মানবসৃষ্ট হ্রদ। নৌকা বা টলারে করে এই হ্রদ ভ্রমণ করলে চোখ জুড়িয়ে যায় আশেপাশের পাহাড় ও গ্রামের দৃশ্য দেখে।
দেখতে পারেন নির্বাণ নগর বৌদ্ধমন্দির, যার পাশেই আছে ছোট্ট পাহাড়ি বাজার। সেখানে স্থানীয়দের তৈরি কাপড়, হাতে বানানো নানান সামগ্রী ও দেশীয় ফল পাওয়া যায়। কাপ্তাই হ্রদের মাঝখানে রয়েছে একটি আদিবাসী গ্রাম, যেখানে প্রায় ১৮টি পরিবার বসবাস করে। তারা নিজেরাই হাতে বুনে কাপড় ও ব্যবহার্য জিনিস তৈরি করে বিক্রি করেন—যা পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়।
রাঙামাটির আরেক আকর্ষণীয় স্থান শুভলং ঝর্ণা। যদিও শুষ্ক মৌসুমে এতে পানি কম থাকে, তবুও এর আশেপাশের প্রাকৃতিক দৃশ্য অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর। কাছাকাছি আরও একটি ছোট ঝরনাও দেখা যায়।
আর অবশ্যই দেখা উচিত ঝুলন্ত ব্রিজ, যা রাঙামাটির অন্যতম প্রতীক। ১৯৮৬ সালে কাপ্তাই হ্রদের উপর নির্মিত ৩৩৫ ফুট দীর্ঘ এই ব্রিজ রাঙামাটিকে দিয়েছে আলাদা বৈশিষ্ট্য ও খ্যাতি। এটি মূলত বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের আওতাধীন, এবং প্রতি বছর হাজারো পর্যটক এখানেই আসেন ছবি তুলতে ও প্রকৃতির শান্তি উপভোগ করতে।
রাঙামাটি—এ যেন প্রকৃতির কোলে লুকিয়ে থাকা এক টুকরো স্বর্গ। পাহাড়ের বুক চিরে বয়ে যাওয়া হ্রদের নীলজল আর পাহাড়ি মানুষের সরল হাসি—সব মিলিয়ে এই শহর সত্যিই মুগ্ধতার এক অনন্য নাম।
নিফ্লা৭১/ওতু
বিষয়:

পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।