নাগরপুর-দেলদুয়ার: তৃণমূলের শক্তি ও রাজনৈতিক ঐতিহ্যের প্রশ্ন
মো.আবদুল মান্নান | প্রকাশিত: ২ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৫৭
দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন ও সংগ্রামের জমি হিসেবে পরিচিত। স্বাধীনতার পর থেকে এই এলাকার মানুষ রাজনৈতিক সচেতনতা, মতাদর্শিক দৃঢ়তা ও সংগঠনশক্তিতে বিশেষ ঐতিহ্য বহন করছে। জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক ধারা এখানকার মাটিতে গভীর শিকড় গেড়েছে, যার কারণে বহু বছর ধরে এই অঞ্চলকে বলা হয়েছে “বিএনপির ঘাঁটি”।
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ের রাজনীতি যেন দীর্ঘদিনের এই বাস্তবতাকে চ্যালেঞ্জ করছে। দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে মাঠে অনুপস্থিত থাকা কিছু নেতা হঠাৎ করে গ্রামের গ্রামে ঘুরছেন, সাদা পায়জামা-পাঞ্জাবিতে লিফলেট বিলি করছেন এবং ক্ষমতার স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। অন্যদিকে, যারা এই সময় তৃণমূলের পতাকা ধরে রেখেছেন, নিপীড়ন সহ্য করেছেন, জেল-জুলুমের পরেও মাঠে ছিলেন— তারা এখন কোণঠাসা।
নাগরপুর-দেলদুয়ারের মানুষ বুঝতে পারছেন, রাজনৈতিক বাস্তবতা যেমনই হোক, তৃণমূলের রক্ত ও ঘামের মূল্য না দিলে রাজনীতি হয়ে যাবে মুখোশধারীদের ব্যবসা।
বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হচ্ছে আগামী নির্বাচনের জন্য দলীয় মনোনয়ন। এখানে জনগণের বিশ্বাস—“নমিনেশন যিনি পাবেন, তিনিই এমপি”—অঘোষিত সত্যের মতো। তাই তৃণমূলের তৃণমূল কর্মীরা চান পরীক্ষিত নেতৃত্ব, যিনি ঝড়-ঝঞ্ঝায়ও দলে অবিচল ছিলেন এবং মানুষের পাশে ছিলেন। জনগণ চায় এমন নেতা, যিনি নাগরপুর-দেলদুয়ারের প্রতিটি পল্লী জানেন, কৃষকের কষ্ট, তরুণের হতাশা ও প্রবাসীর ব্যথা বোঝেন।
রাজনীতিতে একসময় বলা হতো—“দল মানে আদর্শ, নেতা মানে ত্যাগ।” আজ অনেক ক্ষেত্রেই দল মানে কৌশল, নেতা মানে প্রচার। এই প্রবণতা পরিবর্তনের দাবি উঠছে তৃণমূল থেকে। জনগণ স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছেন— এবার এমন নেতা আসুক, যিনি শুধু ভোটের সময় নয়, সারাবছর জনগণের পাশে থাকেন।
নাগরপুর-দেলদুয়ারের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে মানবিকতা ও সংগঠনের শক্তি সবসময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। মানুষ চায় তৃণমূলের মতামত, মাঠের কর্মীদের দিকনির্দেশনা এবং পরীক্ষিত নেতৃত্বের স্বীকৃতি। কারণ এই জনপদ এখনও বিশ্বাস করে—আদর্শই রাজনীতির প্রাণ, আর তৃণমূলই তার আত্মা।
লেখক: সংবাদকর্মী ও ব্যবসায়ী
বিষয়:

পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।