শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩ পৌষ ১৪৩২

"রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা: শিক্ষার্থী-শিক্ষক সংঘর্ষ ও ডিনদের পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল ক্যাম্পাস"

নিউজ ডেস্ক | প্রকাশিত: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫:০৮

সংগৃহীত

চব্বিশের রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রভাব দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) গত কয়েক মাস ধরে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক অস্থিরতার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। পোষ্য কোটা পুনর্বহাল, শিক্ষক ও ডিনদের পদত্যাগের দাবিসহ নানা ঘটনার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত রয়েছেন রাবি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সালাহউদ্দিন আম্মার।

চলতি বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সন্তানদের জন্য পোষ্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নিলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ফেটে পড়ে। ২১ সেপ্টেম্বর শিক্ষার্থীরা উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীনকে গাড়িতে আটকে রাখেন এবং বাসভবনের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। এ ঘটনায় উপ-উপাচার্য ও উপ-রেজিস্ট্রারসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে শারীরিক ঘটনা ঘটে, যা ভিডিওতে ধরা পড়ে। অভিযোগ উঠেছে, এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন রাকসুর জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার।

এরপর আম্মার ‘অপারেশন জিরো টলারেন্স ফর ফ্যাসিজম’ কর্মসূচির আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থি ছয় ডিনের পদত্যাগের আলটিমেটাম দেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পদত্যাগপত্র প্রকাশের পাশাপাশি প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করা হয়। শেষপর্যন্ত প্রশাসন ডিনদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়।

এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের তিনটি সংগঠন—জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম, ইউট্যাব ও জিয়া পরিষদ—নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনের কাছে দাবি জানান। তারা অভিযোগ করেন, রাকসুর জিএস শিক্ষকদের সঙ্গে অশোভন আচরণ ও আতঙ্ক সৃষ্টির মাধ্যমে পুরো ক্যাম্পাসে নৈরাজ্যকর পরিবেশ তৈরি করছেন।

ক্যাম্পাসে অরাজক পরিস্থিতির অভিযোগে শাখা ছাত্রদলও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী নোমান ইমতিয়াজ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় মূলত পড়াশোনার জায়গা, কিন্তু বর্তমানে ক্যাম্পাসে দাঁড়িয়ে তা বলা মুশকিল। একাডেমিক প্রশাসন ও রাকসু—সবই জাতীয় রাজনীতির অংশ হয়ে গেছে।”

রাকসুর জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার এই বিষয়ে বলেন, “আমি ক্যাম্পাসে যা করি, তা সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্যই করি। অনেকেই বিরক্ত হলেও শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করে যাব।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও শিক্ষকরা জানিয়েছেন, সার্বিক পরিস্থিতি বর্তমানে উদ্বেগজনক এবং পড়াশোনা ও গবেষণার পরিবেশ মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হচ্ছে।

 

এনএফ৭১/ওতু



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top