মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২

ব্রেন ডেথ,দেখতে জীবিত হলেও চিকিৎসা ও আইনের চোখে মৃত্যু

লাইফস্টাইল ডেস্ক | প্রকাশিত: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৫৫

সংগৃহীত

‘ব্রেন ডেথ’ বা মস্তিষ্কমৃত্যু অনেকের কাছে বিভ্রান্তিকর। বাইরের দিকে রোগী শ্বাস নিচ্ছে বা হৃদ্‌স্পন্দন চলছে মনে হলেও চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে এটি মৃত্যু। ব্রেন ডেথ হলো এমন একটি অবস্থা, যেখানে মানুষের পুরো মস্তিষ্ক এবং ব্রেনস্টেম স্থায়ীভাবে কাজ করা বন্ধ করে দেয়। ব্রেনস্টেম শরীরের শ্বাস-প্রশ্বাস ও হৃদ্‌স্পন্দন নিয়ন্ত্রণ করে, আর মস্তিষ্ক মৌলিক কার্যক্রম যেমন দেখা, শোনা, স্পর্শ অনুভব ও নড়াচড়া নিয়ন্ত্রণ করে।

ব্রেন ডেথ খুবই বিরল। যুক্তরাষ্ট্রের এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রাপ্তবয়স্কদের হাসপাতালে মৃত্যুর মাত্র ২ শতাংশ ব্রেন ডেথের কারণে ঘটে। প্রধান কারণগুলো হলো: গুরুতর মাথায় আঘাত, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক, অক্সিজেনের অভাব, এবং মস্তিষ্কের সংক্রমণ।

ব্রেন ডেথ নির্ণয়ের জন্য চিকিৎসকরা কঠোর ধাপ অনুসরণ করেন। প্রথমে মূল কারণ শনাক্ত ও চিকিৎসা করা হয়, অনুকরণীয় পরিস্থিতি বাদ দেওয়া হয়, তারপর একাধিক শারীরিক ও স্নায়বিক পরীক্ষা ও অ্যাপনিয়া টেস্ট করা হয়। এই পরীক্ষাগুলো নিশ্চিত করে যে রোগী আর কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারছে না এবং স্বয়ংক্রিয় শ্বাসও নেই।

পরীক্ষার পর ফল পরিবারকে বিস্তারিতভাবে জানানো হয়। ব্রেন ডেথ নিশ্চিত হলে চিকিৎসকরা পরিবারের সঙ্গে পরবর্তী করণীয় আলোচনা করেন, যেমন ভেন্টিলেটর খুলে দেওয়া।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোমা ও ব্রেন ডেথের মধ্যে পার্থক্য হলো—কোমায় থাকা ব্যক্তি কিছু প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে, কিন্তু ব্রেন ডেথে কোনো প্রতিক্রিয়া থাকে না। ব্রেন ডেথ থেকে কেউ সেরে ওঠে না, একবার মস্তিষ্ক সম্পূর্ণভাবে কাজ করা বন্ধ করলে তা আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।

চিকিৎসাবিজ্ঞানের এই কঠিন বাস্তবতা বোঝাতে পরিবারকে প্রতিটি ধাপ বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হয়, কারণ আধুনিক যন্ত্র সাময়িকভাবে শ্বাস ও হৃদ্‌স্পন্দন চালু রাখতে পারে, ফলে অনেক সময় মানুষ দেখতে জীবিত হলেও চিকিৎসা ও আইনের চোখে মৃত।

সূত্র: ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক

 

এনএফ৭১/ওতু



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top