বৃহঃস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫, ৮ শ্রাবণ ১৪৩২

সাহসের এক মিনিট: যখন তৌকির বলেছিলেন, ‘বিমান ভাসছে না’

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ২৩ জুলাই ২০২৫, ১৭:৪২

ছবি: সংগৃহীত

বিমান ভাসছে না, মনে হচ্ছে নিচে পড়ছে—এটাই ছিল ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগর-এর শেষ বার্তা, কন্ট্রোল রুমে। ২১ জুলাই, সোমবার দুপুর সোয়া ১টা। ঢাকার কুর্মিটোলা বিমানঘাঁটি থেকে এফটি-৭ যুদ্ধবিমান নিয়ে একক উড্ডয়ন করেছিলেন তৌকির।

এটি ছিল তার প্রথম সোলো ফ্লাইট—প্রশিক্ষণের সবচেয়ে জটিল এবং ঝুঁকিপূর্ণ ধাপ।এ ধাপে একজন বৈমানিককে সম্পূর্ণ একা যুদ্ধবিমান চালাতে হয়, কোনো সহকারী বা প্রশিক্ষক ছাড়াই। উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই হঠাৎ করেই বিমানটির আচরণ হয়ে ওঠে অস্বাভাবিক।

কন্ট্রোল রুমে পাইলটের কণ্ঠ শোনা যায়—বিমান ভাসছে না, মনে হচ্ছে নিচে পড়ছে। সঙ্গে সঙ্গে কন্ট্রোল রুম থেকে নির্দেশ আসে—ইজেক্ট করুন! এখনই ইজেক্ট করুন! অর্থাৎ, সিট থেকে বের হয়ে প্যারাসুটে করে লাফ দিন। কিন্তু তৌকির সাগর ইজেক্ট করেননি।

তিনি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চেষ্টা করেছেন বিমানটিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে। কারণ তার নিচেই ছিল স্কুল শিশুরা। মাত্র ১ মিনিটের মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বিমানটি ভয়ংকর গতিতে নেমে আসে এবং মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিধ্বস্ত হয়।

৩২টি প্রাণ হারায়। বহু মানুষ দগ্ধ। তৌকির নিজেও আর ফেরেননি। তবে তার সেই শেষ সিদ্ধান্ত—শেষ চেষ্টা চালানো, সেটা আজ মাথা নিচু করে দেয় শ্রদ্ধায়। ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগর, আপনি শহীদ। আপনি আমাদের গর্ব। বিমান ভাসছে না, আপনার সেই বার্তার মধ্যেই ছিল সাহসের সবচেয়ে উজ্জ্বল প্রকাশ।



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top