ডেঙ্গুতে মৃত্যুর মিছিল, আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা
নিউজফ্ল্যাশ ডেস্ক | প্রকাশিত: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:০৭

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ঢাকায় জয়ন্তী মণ্ডল মারা যাওয়ার পরদিনই মৃত্যুবরণ করেন তাঁর মেয়ে প্রতিভা মণ্ডল। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম ২৩ দিনে ডেঙ্গুতে প্রাণ হারিয়েছেন ৬০ জন। এ সময় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১১ হাজার ৬৯৭ জন। এ বছর মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮২ জনে।
অধিদপ্তরের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মৃতদের মধ্যে ৮১ শতাংশ তিন দিন বা তার বেশি সময় জ্বরে আক্রান্ত থাকার পর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তির ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই ৭৪ শতাংশ রোগী মারা যান। এর মধ্যে ৫০ শতাংশের মৃত্যু হয় ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে (ডিএসএস)। এ ছাড়া মৃতদের ৪৩ শতাংশ অন্যান্য রোগেও ভুগছিলেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. হালিমুর রশিদ জানান, মৃত্যুর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সি রোগী১৯ জন। এরপর ০ থেকে ১০ ও ৪০ থেকে ৫০ বছর বয়সিদের মৃত্যু বেশি, ১৬ জন করে। মৃতদের মধ্যে ৫৩ শতাংশ পুরুষ, বাকিরা নারী।
রাজধানীর মহাখালী ডিএনসিসি ডেঙ্গু ডেডিকেটেড হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছেন বিভিন্ন বয়সী রোগী। অনেকের হাতে ক্যানুলা লাগিয়ে ফ্লুইড দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, বৃদ্ধ রোগীরা নানা জটিলতার কারণে বেশি ঝুঁকিতে আছেন। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছেন শিশুরা। জ্বরের সঙ্গে সুঁইয়ের খোঁচায় তারা প্রচণ্ড কষ্ট পাচ্ছে। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১২৯ জন ডেঙ্গু রোগী।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলেন, “ডেঙ্গুর বিস্তার এখন শুধু মৌসুমি পরিবর্তনের ওপর নির্ভর করছে না। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মশার প্রজনন মৌসুম দীর্ঘায়িত হয়েছে। হালকা বৃষ্টিপাত মশার প্রজননস্থলগুলোকে সক্রিয় করে, আবার ভারী বৃষ্টি অনেক সময় ডিম ও লার্ভা ধ্বংস করে দেয়। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আবহাওয়াভিত্তিক পূর্ণাঙ্গ পূর্বাভাস মডেল তৈরি করা জরুরি।”
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।