আকাশবাণীর মহালয়ার মহিষাসুরমর্দিনী
নিউজফ্ল্যাশ ডেস্ক | প্রকাশিত: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৩৮

আকাশবাণীর মহালয়ার মহিষাসুরমর্দিনী শুধু একটি রেডিও অনুষ্ঠান নয়, এটি সনাতন হিন্দুধর্মের হাজার বছরের দর্শন, সংস্কৃতি আর পূজার আবহকে অমরত্ব দিয়েছে। শ্রী বাণী কুমারের রচনা, শ্রী পঙ্কজ কুমার মল্লিকের সংগীত পরিচালনা এবং শ্রী বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের অনবদ্য কণ্ঠে শ্লোকপাঠ বাঙালির দুর্গাপূজার প্রভাতী আবহকে যুগের পর যুগ ধরে স্মরণীয় করে রেখেছে।
চণ্ডীর ধ্যানশ্লোক দিয়ে শুরু হওয়া এই অনুষ্ঠান ধাপে ধাপে দেবীর মাহাত্ম্য, প্রকৃতির শরৎকালীন সৌন্দর্য, সনাতন ধর্মের দার্শনিক ব্যাখ্যা ও দেবী দুর্গার আবির্ভাবকে তুলে ধরে। বাংলা গদ্য, কাব্যময় ভাষা আর সংগীতের ছন্দময় উপস্থাপনায় এতে ফুটে ওঠে দেবীর চিন্ময় থেকে মৃণ্ময় রূপে আগমন, সত্ত্ব-রজ-তম গুণের সমন্বয়, সৃষ্টি থেকে বিনাশে আনন্দের জয়গান।
অনুষ্ঠানে মহিষাসুর বধের কাহিনি, দেবীর রূপবর্ণনা, সনাতন দর্শনের মূর্ত ও বিমূর্ত ধারণা, উপনিষদ ও গীতার সারাংশ একাকার হয়ে ধরা দেয়। সর্বশেষে উচ্চারিত হয় দেবী চণ্ডিকার ত্রিশক্তির মাহাত্ম্য—সরস্বতী, লক্ষ্মী ও দুর্গা; যা মানবজীবনের ধর্ম, অর্থ, কাম ও মোক্ষ সাধনের পথ।
আকাশবাণীর মহিষাসুরমর্দিনী তাই শুধু একটি অনুষ্ঠান নয়, এটি বাঙালির দুর্গোৎসবের অপরিহার্য আধ্যাত্মিক সঙ্গী, যেখানে শ্রবণ আনন্দের সঙ্গে দার্শনিক উপলব্ধিও মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়।
লেখক: স্থপতি ও পরিকল্পনাবিদ, সহযোগী অধ্যাপক, স্থাপত্য বিভাগ, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।