সোমবার, ১১ আগস্ট ২০২৫, ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২

জাপানে যেভাবে বাড়ছে মুসলিমদের সংখ্যা

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৫৬

ছবি: সংগৃহীত

সূর্যোদয়ের দেশ জাপানে মুসলিমরা সংখ্যালঘু হলেও দেশটিতে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। জাপানে গত এক দশকে মুসলিম জনসংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণের চেয়ে বেশি হয়েছে। এছাড়া দেশটিতে মসজিদের সংখ্যাও বেড়ে গেছে।

বর্তমানে জাপানজুড়ে মসজিদ রয়েছে দেড় শতাধিক। দুই দশক আগেও যা ছিলো হাতে গোনা কয়েকটি। এশিয়ার দেশটিতে মুসলিম কমিউনিটির মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশিও রয়েছে। মূলত, দেশটিতে ধর্ম চর্চা ও প্রসারের অবাধ সুযোগের কারণেই বাড়ছে মুসলিম বাসিন্দার সংখ্যা।

জাপানের ওয়াসেদা বিশ্ববিদ্যালয়ের তানাদা হিরোফুমির বরাত দিয়ে দ্য ইকোনোমিস্ট জানিয়েছে, গত ১০ বছরে জাপানে মুসলিম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি হয়েছে। পরিসংখ্যানে বলা হচ্ছে যে, গত ১০ বছরে ৫০ হাজারেরও বেশি জাপানি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে।

উদীয়মান এই সূর্যের দেশে ইসলাম কিভাবে এসেছিল তার নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। যতটুকু জানা যায় সম্ভবত উসমানি খেলাফতের সময় সুলতান আব্দুল হামিদ সর্বপ্রথম ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে নৌপথে তাঁর জাহাজ ‘আর্তগর্ল’-এ এক সৌজন্যমূলক মিশন জাপানে পাঠিয়েছিলেন। বাহ্যত তাঁর উদ্দেশ্য ছিল, এ অঞ্চলে ইসলামের দাওয়াতের সম্ভাবনা সম্পর্কে সমীক্ষা চালানো। প্রতিনিধি দলটি জাপানে খুব ভালো প্রভাব সৃষ্টি করে।মূলত তাঁরা এ অঞ্চলে ইসলাম কবুলের বীজ বপন করে যান।

জাপানের প্রথম মুসলিম কে ছিলেন তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। তবে মজার বিষয় হলো, জাপানের প্রথম মুসলিম হিসেবে যে দুজন ব্যক্তির কথা উল্লেখ করা হয়, তন্মধ্যে একজনের নাম তুরাজিরু। তিনি ছিলেন একজন ব্যবসায়ী। ইসলাম গ্রহণের পর তাঁর নাম রাখা হয় আব্দুল খলিল। আর অপরজনের নাম ছিল সোতারো নোডা। তিনি ছিলেন একজন সাংবাদিক। ইসলাম গ্রহণের পর তাঁর নাম রাখা হয় আব্দুল হালিম।(https://www.islamcenter.or.jp/history-of-islam-in-japan/)

রুশ বিপ্লবের পর রাশিয়া থেকে কয়েকশ তুর্কি মুসলিম অভিবাসী ১৯২০-র দশকে জাপানে পাড়ি জমায়। ১৯৩০ সালে জাপানে বিভিন্ন দেশের এক হাজার মুসলিম ছিল। পরবর্তীতে ১৯৮০-র দশকে ইরান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে অভিবাসী কর্মীরা জাপানে পাড়ি দিলে সেখানে মুসলিম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।

ধারণা করা হয়, অষ্টম শতকে চীনা মুসলিমদের সংস্পর্শে জাপানিরা সর্বপ্রথম ইসলামে দীক্ষিত হন। মেইজি শাসনামলে (১৮৬৮-১৮৯০) জাপানিরা অটোম্যান সাম্রাজ্যের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। এরপর থেকে মুসলিমরা জাপানে যাতায়াত করেন এবং জাপানিরা ইসলামের সান্নিধ্যে আসতে শুরু করেন। ১৯৩৮ সালে অটোম্যান স্থাপত্যরীতিতে নির্মিত ‘টোকিও জামি’ জাপানের অন্যতম প্রাচীন মসজিদ।



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top