মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২

বিজয়ের মালিক মহান আল্লাহ, মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ও তাঁরই রহমতে

ধর্ম ডেস্ক | প্রকাশিত: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৪৭

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয় আল্লাহরই এক অমূল্য দান। ইসলামের শিক্ষা অনুসারে আল্লাহ মজলুমের প্রতি করুণা করেন এবং অন্যায়কারীদের বিরুদ্ধে তার বিজয় নিশ্চিত করেন। মানুষ আল্লাহ ছাড়া কারও দাসত্ব মেনে নিতে পারে না।

মুক্তিসংগ্রামে অংশ নিয়েছে দেশের সকল স্তরের মানুষ, এবং আলেম সমাজের সিংহভাগ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিল। মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, মাওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশসহ অসংখ্য আলেম মুক্তিযুদ্ধকে প্রেরণা জুগিয়েছিলেন। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরে অর্জিত হয় এই মহান বিজয়।

আল কোরআনে বলা হয়েছে, “নিশ্চয় আমি তোমাকে সুস্পষ্ট বিজয় দান করেছি” (সূরা আল-ফতহ : ১)। হুদায়বিয়ার সন্ধির পর এ আয়াত নাজিল হয়ে মুমিনদের সংশয় নিরসন করেছিল। বিজয়ের অধিকার একমাত্র আল্লাহর, তাই মুক্তিযুদ্ধেও তাঁর রহমতের ওপর ভরসা করা হয়েছিল।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং দেশীয় সহযোগী রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনী সাধারণ মানুষকে হত্যা, লুটপাট এবং ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। এ সময় ইসলামী বিধান লঙ্ঘন হয়। আল কোরআনে এ ধরনের প্রতারকদের উদ্দেশ্যে ইরশাদ হয়েছে, “কিছু লোক বলে আমরা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ইমান এনেছি, অথচ আদৌ তারা ইমানদার নয়” (সূরা বাকারা : ৮)।

ইসলামে দেশপ্রেমকেও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। নবী-রাসুলরা তাদের জন্মভূমির প্রতি গভীর ভালোবাসা প্রদর্শন করেছেন। হজরত ইবরাহিম (আ.) কাবা পুনর্নির্মাণ ও মক্কায় দাওয়াত প্রচারের সময়ে তার নগরী ও অধিবাসীদের নিরাপত্তা ও রিজিকের জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছিলেন। আরবি প্রবচন ‘হব্বুল ওয়াতান মিনাল ইমান’ অর্থাৎ ‘দেশপ্রেম ইমানের অংশ’। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদিনায় হিজরতকালে মক্কার প্রতি তাঁর অপরিসীম ভালোবাসা প্রকাশ করেছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধের এই বিজয় আমাদের জন্য কেবল একটি ঐতিহাসিক অর্জন নয়, এটি আল্লাহর প্রতি ভরসা ও মজলুমের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতীক। বিজয়ের মাসে আমরা মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের মাগফিরাত কামনা করছি এবং দেশ ও স্বাধীনতার সুরক্ষার জন্য আল্লাহর সহায়তা প্রার্থনা করছি।

লেখক: ইসলামিক গবেষক



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top