মাত্র ১০০ টাকার মিথ্যা ঘুষের অভিযোগে ৩৯ বছরের লাঞ্ছনা,অবশেষে নির্দোষ প্রমাণিত জগেশ্বর প্রসাদ

মিঠু মুরাদ | প্রকাশিত: ২ নভেম্বর ২০২৫, ১০:১৮

ছবি: সংগৃহীত

ভারতের ছত্তিশগড়ের রাজধানী রায়পুরের এক প্রবীণ ব্যক্তি জগেশ্বর প্রসাদ আওয়াধিয়ার (৮৩) জীবনের ৩৯ বছর কেটেছে এক মিথ্যা মামলার যন্ত্রণায়। মাত্র ১০০ টাকা ঘুষ নেওয়ার মিথ্যা অভিযোগে সমাজের লাঞ্ছনা, চাকরি হারানো এবং আদালতের ঘনঘন হাজিরায় ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। অবশেষে বিচারকের রায়ে নির্দোষ প্রমাণিত হলেও, জীবনের শেষ প্রান্তে এসে জগেশ্বরের একমাত্র আকাঙ্ক্ষা—“এখন অন্তত শান্তিতে মরতে চাই।”

আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৯৮৬ সালে ৪৪ বছর বয়সে জগেশ্বর ছিলেন মধ্যপ্রদেশ রাজ্য সড়ক পরিবহন কর্পোরেশনের বিলিং সহকারী। সততা ও নিয়ম মেনে কাজ করতেন তিনি। একদিন সহকর্মী অশোক কুমার বর্মা তার বকেয়া বিল পরিশোধের জন্য জগেশ্বরকে ঘুষ দিতে চান। প্রথমে ২০ টাকা দিতে চাইলেও তা প্রত্যাখ্যান করেন জগেশ্বর। পরে ২৪ অক্টোবর অশোক ফাঁদ পেতে জোর করে তার হাতে ১০০ টাকা গুঁজে দেন। ঠিক সেই মুহূর্তে হাজির হয় নজরদারি দল—বিনা তদন্তেই গ্রেপ্তার করা হয় জগেশ্বরকে।

এরপর থেকে শুরু হয় দুর্বিষহ জীবন। সমাজে ঘুষখোরের তকমা, অফিস থেকে বরখাস্ত, বেতন অর্ধেকে নামানো, পদোন্নতি বন্ধ, অবসরের পর পেনশন বন্ধ সব মিলিয়ে এক সৎ মানুষের জীবন ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। সংসার চালাতে শেষে তাকে করতে হয় প্রহরীর কাজ।

দীর্ঘ ৩৯ বছরের আইনি লড়াইয়ের পর আদালত অবশেষে ঘোষণা করে, জগেশ্বর প্রসাদ সম্পূর্ণ নির্দোষ। কিন্তু এত বছর পর এই রায় তার জীবনে ফেরাতে পারেনি হারানো সময়, মান-সম্মান কিংবা জীবনের স্বপ্ন।

৮৩ বছর বয়সে আবেগে ভেঙে পড়া জগেশ্বর বলেন,  “সত্যের জয় হয়েছে, এখন অন্তত শান্তিতে মরতে পারব।”



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top