বিটকয়েনের দাম ধসে এক লাখ ডলারের নিচে, জুনের পর সর্বনিম্ন পর্যায়ে

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিপ্টোকারেন্সি বা ডিজিটাল মুদ্রা বিটকয়েনের দাম হঠাৎ করেই ধস নামিয়েছে। বুধবার (৫ নভেম্বর) এক দিনে এর দাম কমেছে ৬ শতাংশেরও বেশি। এতে জুনের পর প্রথমবারের মতো এক লাখ ডলারের নিচে নেমে এসেছে বিটকয়েনের মূল্য।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশ্বব্যাপী শেয়ারবাজারে অস্থিরতা এবং বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকিহীন সম্পদের দিকে ঝোঁকই এই পতনের মূল কারণ।

বাজার পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, কয়েক দিনের ধারাবাহিক পতনের পর বিটকয়েনের দাম দাঁড়িয়েছিল ১ লক্ষ ১ হাজার ৮২২ ডলারে। সেখান থেকে বুধবার ৩.৭ শতাংশ কমে ৯৯ হাজার ১০ ডলারে নেমে আসে প্রতি বিটকয়েনের দাম। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১২১ লাখ টাকা।

এ বছরের শুরু থেকেই বিটকয়েনের দামে ছিল উত্থান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর ক্রিপ্টোকারেন্সির বাজারে চাঙাভাব দেখা দেয়। অক্টোবরে বিটকয়েনের দাম ছুঁয়েছিল ইতিহাসের সর্বোচ্চ ১ লক্ষ ২৬ হাজার ১৮৬ ডলার। সেখান থেকে এখন প্রায় ২০ শতাংশ মূল্য হারিয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম ডিজিটাল মুদ্রাটি।

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, সম্প্রতি ওয়াল স্ট্রিটের শীর্ষ নির্বাহীরা সম্ভাব্য ‘মার্কেট কারেকশন’ বা বাজার সংশোধনের ইঙ্গিত দেওয়ার পর থেকেই বিনিয়োগকারীরা ক্রিপ্টো ও প্রযুক্তি খাত থেকে অর্থ সরিয়ে নিচ্ছেন। এতে শুধু বিটকয়েন নয়, অন্যান্য ডিজিটাল সম্পদগুলোর দামও দ্রুত নিচে নামছে।

বিটকয়েনের এই পতনে গত কয়েক মাসের অর্জিত বেশিরভাগ লাভ প্রায় শেষের পথে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-সম্পর্কিত বিনিয়োগের উত্সাহে যে উর্ধ্বগতি তৈরি হয়েছিল, তা এখন কার্যত থেমে গেছে।

এদিকে নিরাপদ সম্পদের দিকে বৈশ্বিক ঝোঁকের কারণে মার্কিন ডলার ইউরোর বিপরীতে চার মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। মার্কিন ১০ বছরের ট্রেজারি বন্ডের আয় কমে ৪.০৮৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ইউরো টানা পঞ্চম দিনে কমে ১.১৪৮-এ নেমে গেছে, যা ১ আগস্টের পর সর্বনিম্ন। ব্রিটিশ পাউন্ডও ০.৭২ শতাংশ কমে ১.৩০ ডলার হয়েছে।

ক্রিপ্টোর পতনের ধাক্কা পড়েছে পণ্যবাজারেও। ডলার শক্তিশালী হওয়ায় তেলের দাম কমেছে। মার্কিন ক্রুড অয়েল প্রতি ব্যারেল ৪৯ সেন্ট কমে ৬০.৫৬ ডলারে এবং ব্রেন্ট ক্রুড ৪৫ সেন্ট কমে ৬৪.৪৪ ডলারে নেমে এসেছে।