শনিবার, ১ নভেম্বর ২০২৫, ১৭ কার্তিক ১৪৩২

এক মাস ভাত-রুটি না খেলে শরীরে কী ঘটে? জানুন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ

লাইফস্টাইল ডেস্ক | প্রকাশিত: ১ নভেম্বর ২০২৫, ১৪:২২

সংগৃহীত

ওজন কমানো বা সুস্থ থাকার জন্য অনেকেই এখন ভাত ও রুটি খাওয়া কমিয়ে দিচ্ছেন। এই দু’টি খাবারে প্রচুর কার্বোহাইড্রেট থাকে, যা শক্তি দেয়, কিন্তু বেশি খেলে ওজনও বাড়তে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, একটানা ৩০ দিন ভাত ও রুটি বাদ দিলে শরীরে কয়েকটি পরিবর্তন দেখা দেয়।

১. শরীর চর্বি পুড়িয়ে শক্তি তৈরি করে

ভাত-রুটি না খেলে শরীর শক্তির জন্য চর্বি ব্যবহার করতে শুরু করে। এই প্রক্রিয়াকে বলে কিটোসিস। শুরুতে একটু দুর্বল লাগলেও কিছুদিন পর অনেকেই হালকা, সতেজ ও শক্তিময় অনুভব করেন।

২. ওজন দ্রুত কমে

প্রথম সপ্তাহেই ১–২ কেজি পর্যন্ত ওজন কমতে পারে, যদিও শুরুতে এটি মূলত পানি কমার কারণে হয়।

৩. রক্তে চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে আসে

ডায়াবেটিস বা ইনসুলিন সমস্যা যাদের আছে, তারা ভাত-রুটির বদলে ওটস, বার্লি বা মিলেট খেলে উপকার পাবেন। এসব খাবারের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম, ফলে রক্তে চিনির ওঠানামা কম হয়।

৪. হজমে পরিবর্তন

ভাত-রুটি না খেলে অনেকের পেট হালকা লাগে। তবে যথেষ্ট ফাইবার না পেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। তাই প্রচুর সবজি, ফল, বাদাম ও বীজ খাওয়া জরুরি।

৫. খিদে ও তৃষ্ণা বেড়ে যেতে পারে

ভাত-রুটি অনেকের জন্য মানসিক প্রশান্তির খাবার। হঠাৎ বাদ দিলে খিদে বা অস্থিরতা বেড়ে যেতে পারে। তখন ফল, দই বা হালকা বিকল্প নেওয়া যেতে পারে।

৬. কিছু পুষ্টির ঘাটতি দেখা দিতে পারে

ভাত ও রুটিতে ভিটামিন বি, আয়রন ও ম্যাগনেশিয়াম থাকে। এগুলো বাদ দিলে মাল্টিগ্রেইন, রাগি, জোয়ার, আমরান্থের মতো খাবার দিয়ে ঘাটতি পূরণ করা উচিত।

৭. খাওয়ার অভ্যাসে সচেতনতা আসে

৩০ দিন ভাত-রুটি বাদ দিলে নিজস্ব খাওয়ার প্যাটার্ন বোঝা যায় এবং ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নেওয়া সহজ হয়।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভাত-রুটি পুরোপুরি বাদ দেওয়া উচিত নয়। কার্বোহাইড্রেট শরীরের প্রধান শক্তির উৎস এবং মস্তিষ্কের কাজেও গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যকর বিকল্প হিসেবে নেওয়া যেতে পারে:

সাদা চালের বদলে ব্রাউন বা আতপ চাল

সাধারণ আটার বদলে মাল্টিগ্রেইন বা রাগির আটা

মিলেট (রাগি, বাজরা, জোয়ার), কুইনোয়া, ডালিয়া, বাকউইট

ফুলকপির ভাত বা মিলেট রুটি

সবজি, ডাল ও শাক

এক মাস ভাত-রুটি ছাড়া খেলে শরীর ও মন দুটোই নতুনভাবে অভ্যস্ত হতে শুরু করে। ওজন কমে, শক্তি বাড়ে এবং খাওয়ার অভ্যাসে সচেতনতা আসে। তবে দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যকর ও ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যাভ্যাসই মূল চাবিকাঠি।

 

নিফ্লা৭১/ওতু



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top