মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২

গয়েশ্বর রায় এর ওপর হামলা নিয়ে যা বলছে যুক্তরাষ্ট্র

রাজিউর রাহমান | প্রকাশিত: ১ আগষ্ট ২০২৩, ২০:১৪

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সহিংতার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে স্বচ্ছতার সাথে তদন্ত চালিয়ে ব্যবস্থা নেয়ার আহবানও জানায় দেশটি। সোমবার (৩১ জুলাই) মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। পরে তাদের ওয়েবসাইটে এই ব্রিফিংয়ের বিস্তারিত বক্তব্য তুলে ধরা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ম্যাথিউ মিলারকে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছেন লাখো মানুষ। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়ার রিপোর্টে বলা হয়েছে, শনিবার পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের সদস্যরা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে অংশ নেওয়া মানুষ এবং বিরোধী নেতাদের ওপর হামলা চালায়, ফলে শীর্ষস্থানীয় বিরোধী নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ শতাধিক আহত হয়েছেন। ক্রমবর্ধমান এই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণসহ বিরোধী দলের ওপর পুলিশের হামলা এবং এ বিষয়ে সরকারের স্পষ্টত কট্টরপন্থি অবস্থান বিবেচনা করে সামগ্রীক বিষয়কে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন? বাংলাদেশে বিশ্বাসযোগ্য ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের সম্ভাবনা নিশ্চিত করতে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট কী পদক্ষেপ নেবে?

জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‌আমরা এই সপ্তাহান্তের রাজনৈতিক বিক্ষোভকে ঘিরে বাংলাদেশে ভীতি প্রদর্শন এবং রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনায় উদ্বিগ্ন। আমরা এসব সহিংসতার পুঙ্খানুপুঙ্খ, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত করতে এবং সহিংসতায় জড়িত অপরাধীদেরকে জবাবদিহির আওতায় আনতে বাংলাদেশ সরকারকে উৎসাহিত করি।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের জনগণ যেন শান্তিপূর্ণভাবে সমবেত হয়ে সমাবেশ করতে পারে এবং তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করতে পারে সেজন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করতে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি। একইসঙ্গে সব পক্ষকে মৌলিক স্বাধীনতা ও আইনের শাসনকে সম্মান করতে এবং সহিংসতা, হয়রানি ও ভীতি প্রদর্শনের মতো কাজ থেকে বিরত থাকতেও আমরা আহ্বান জানাই।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এই মুখপাত্র বলেন, পরিশেষে আমি বলব, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সবার দায়িত্ব ও প্রতিশ্রুতির ওপর নির্ভর করে। এখানে ভোটার, রাজনৈতিক দল, যুব সমাজ এবং পুলিশ; সবার ওপর দায়িত্ব রয়েছে। আর রাজনৈতিক সহিংসতার পরিবেশে এটি (অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন) হতে পারে না।

পরে অপর এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, বাংলাদেশ জাতীয় নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নীতিও ঘোষণা করেছে। এছাড়াও ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করার বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন। কিন্তু প্রধান বিরোধী দল গত সপ্তাহে দেশের রাজধানীতে অগ্নিসংযোগ, সন্ত্রাস ও ভাঙচুর চালিয়েছে। তারা শুধু বেসামরিক সম্পত্তি নয়, পুলিশের সম্পত্তিও আক্রমণ করছে। সেখানে তারা সবকিছু পুড়িয়ে দিয়েছে। তারা রাজধানীতে যুদ্ধক্ষেত্রের মতো পরিস্থিতি তৈরি করেছে। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কি?

জবাবে মিলার বলেন, আমি আগের প্রশ্নের উত্তরে এ বিষয়ে আমার মন্তব্য করেছি।

এই পর্যায়ে ওই সাংবাদিক বলেন, আমি আপনার কাছ থেকে শুধু একটি পর্যবেক্ষণ চাই, গত ১৫ জুন কানাডার ফেডারেল বিচারক বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে চিহ্নিত করেছেন। এ নিয়ে পঞ্চমবারের মতো দলটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যা দিল তারা। সে বিষয়ে আপনার পর্যবেক্ষণ কি?

জবাবে মিলার বলেন, এ বিষয়ে আমার কোনও পর্যবেক্ষণ নেই।

গেলো শনিবার (২৯ জুলাই) বিএনপির অবস্থান কর্মসূচির সময় পুরান ঢাকার ধোলাইখালে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় গয়েশ্বর আহত হন। দুপুরের দিকে পুলিশভ্যানে করে তাকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান হারুন অর রশীদের সঙ্গে গয়েশ্বর খাবার খান। বিকেল ৩টার দিকে ডিবি কার্যালয় থেকে গয়েশ্বরকে নয়াপল্টনে তার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে পৌঁছে দেয়া হয়।




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top