ভেনিসে ইতিহাস: পুরুলিয়ার অনুপূর্ণা রায়ের হাতে অরিজ্জন্তি সেরা পরিচালকের পুরস্কার
Md. Mithu Murad | প্রকাশিত: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৪৩

পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়ার নারায়ণপুর গ্রামের তরুণী অনুপূর্ণা রায় লিখে ফেললেন নতুন ইতিহাস। আইটি খাতের চাকরি ছেড়ে সিনেমার পথে যাত্রা শুরু করা এই নির্মাতা ইতালির ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে জিতে নিলেন অরিজ্জন্তি বিভাগে সেরা পরিচালকের পুরস্কার। তাঁর প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র “সংস অব ফরগটেন ট্রিজ”—এর জন্যই মিলল এই সম্মান, যা এই বিভাগে প্রথম কোনো ভারতীয় পরিচালকের জয়।
নাজ শেখ ও সুমি বাঘেল অভিনীত ছবিতে মুম্বাই শহরের ভিড়ে নিঃসঙ্গ দুই নারীর সংগ্রাম, সম্পর্ক আর টিকে থাকার গল্প উঠে এসেছে। থুয়া চরিত্রে অভিনয় করেছেন নাজ, যিনি সংসার চালাতে কখনো অভিনয়, কখনো যৌনকর্মে জড়িয়ে পড়েন। স্বেতা চরিত্রে সুমি কল সেন্টারে কাজ করলেও জীবনে খুঁজে বেড়ান স্থিরতা। শহরের বিশৃঙ্খলায় তাঁরা একে অপরের মধ্যে খুঁজে পান আশ্রয়।
পুরস্কার গ্রহণের সময় অশ্রুসিক্ত অনুপূর্ণা বলেন, “এই জয় উৎসর্গ করছি সব ভারতীয় নারীকে, যাঁদের কণ্ঠস্বর বছরের পর বছর চাপা পড়ে থেকেছে। আশা করি এই স্বীকৃতি আরও অনেক গল্পকে শক্তি জোগাবে।” একই মঞ্চে তিনি গাজার ওপর ইসরায়েলি হামলারও নিন্দা জানান।
অনুরাগ কাশ্যপের সহায়তায় নির্মিত ছবিটির প্রযোজক বিবাংশু রায়, রোমিল মোদি ও রঞ্জন সিং। মুম্বাইয়ের আজাদ নগরের ছোট্ট ফ্ল্যাটেই ছবির চিত্রনাট্য লেখা থেকে শুটিং পর্যন্ত সম্পন্ন হয়। অভিনেত্রীদের সঙ্গে তিন মাস একসঙ্গে বসবাস করে তৈরি হয়েছিল এই চলচ্চিত্রের স্মৃতি।
সমালোচকেরা বলছেন, ছবির সংলাপ কখনো কখনো আরোপিত হলেও প্রধান অভিনেতাদের অভিনয় চলচ্চিত্রটিকে আলাদা উচ্চতায় নিয়ে গেছে। বিশেষ করে ভূষণ শিম্পি জমিদারের শিকারি চরিত্রে এক ভয়ংকর বাস্তবতা ফুটিয়ে তুলেছেন।
পুরস্কার হাতে পেয়ে অনুপূর্ণা বলেন, “পুরস্কার মানে দায়িত্ব। আমাকে আরও জরুরি গল্প বলতে হবে, আরও ভালো হতে হবে।” কৃতজ্ঞতা জানালেন পথিকৃৎ নারী নির্মাতা পায়েল কাপাডিয়া, কিরণ রাও, জোয়া আখতার, রীমা দাশ ও মীরা নায়ারের প্রতি।
দশ বছর পর নিজ গ্রামে ফেরার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অনুপূর্ণা বলেন, “ওরা হয়তো পুরোপুরি বুঝবে না, কিন্তু আমি জানি, তারা খুশি হবে। এবার ফিরব অন্যরকম জয় নিয়ে।”
তথ্যসূত্র: দ্য হলিউড রিপোর্টার ইন্ডিয়া
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।