নির্বিচারে গুলি, পুড়ে ছাই স্বপ্ন—২১ জুলাইয়ের গণহত্যা
নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ২১ জুলাই ২০২৫, ১১:২৯

২১ জুলাই...বাংলাদেশের ইতিহাসে আরেকটি রক্তাক্ত দিন। হাইকোর্টের কোটা পুনর্বহাল সংক্রান্ত রায় বাতিলের দিনেই, ঢাকাসহ সারাদেশে নেমে আসে ভয়াবহ সহিংসতা। কারফিউর মধ্যে পুলিশের গুলিতে এবং ক্ষমতাসীন দলের সশস্ত্র ক্যাডারদের হামলায় নিহত হন অন্তত ২১ জন শিক্ষার্থী ও আন্দোলনকারী।
এর মাত্র ২ দিন আগে—১৯ জুলাই রাতে, কোটা আন্দোলনের অন্যতম নেতা নাহিদ ইসলামকে খিলগাঁওয়ের নন্দীপাড়া থেকে তুলে নেয়া হয়। নৃশংস নির্যাতনের পর ২১ জুলাই রাস্তার পাশে ফেলে রাখা হয়। তার শরীরজুড়ে রক্ত জমাট, আঘাতে নীল-তামাটে হয়ে যাওয়া দাগ।
২১ জুলাই ভোরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠক করেন সেনাবাহিনী, পুলিশ ও শীর্ষ প্রশাসনের সঙ্গে। এর পরেই সকাল ১০টায় আপিল বিভাগ বাতিল করে দেয় হাইকোর্টের বিতর্কিত রায়। নতুন রায়ে সরকারি চাকরিতে ৭ শতাংশ কোটা বহাল রাখার কথা জানানো হয়—৫% মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য, ১% ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী, ১% প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য। বাকি ৯৩ শতাংশ থাকবে মেধাভিত্তিক।
রায়কে স্বাগত জানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, তারা শাটডাউন কর্মসূচি স্থগিত করে—তবে দেয় ৪৮ ঘণ্টার সময়সীমা। তাদের দাবি ছিল: কারফিউ প্রত্যাহার, ইন্টারনেট চালু, হল খোলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
কিন্তু এরই মাঝে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম—জ্বালাও-পোড়াও, সংঘর্ষ আর গুলির শহর হয়ে ওঠে। ২১ জুলাই সন্ধ্যার পর নিহতদের নাম প্রকাশ বন্ধ করে দেয় ঢাকা মেডিকেল। ৫ দিনে নিহত ১৭৪ জন। আর গ্রেপ্তার অন্তত ৫৫০—যাদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপি, জামায়াত ও গণতন্ত্রপন্থী অনেক নেতা-কর্মী। শুধু আন্দোলন নয়, রাজনীতি, প্রশাসন, বিচার—সব কিছুই যেন এক অগ্নিকুণ্ডের মধ্য দিয়ে হাঁটছে। এই কি তবে গণতন্ত্রের মুখ?
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।