বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫, ৮ শ্রাবণ ১৪৩২

জীবন দিলেন শিক্ষিকা মাহরিন, বাঁচালেন ২০ শিশুর প্রাণ, শেষ কথা কী ছিল

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ২৩ জুলাই ২০২৫, ১৪:২৭

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার উত্তরা, হঠাৎই আকাশ থেকে বিধ্বস্ত হয় যুদ্ধবিমান। আগুন, ধোঁয়া, আতঙ্ক। কিন্তু ঠিক সেই মুহূর্তেই এক নারী এগিয়ে গেলেন মৃত্যুর মুখে। মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষিকা মাহরিন চৌধুরী—তিনি একাই ২০ জন কোমলমতি শিশুকে জীবিত উদ্ধার করেন। আর তাদের বাঁচাতে গিয়েই নিজে পুড়ে যান ভয়াবহভাবে।

গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় তিনি ভর্তি হন জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে। সেখানেই ২১ জুলাই রাত সাড়ে ১০টায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই বীর নারী। মৃত্যুর পর সামনে আসে মাহরিন চৌধুরীর আসল পরিচয়। তিনি ছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদরের ভাতিজি। তার বাবা এম আর চৌধুরী ছিলেন জিয়ার মামাতো ভাই।

রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ পরিবারের সদস্য হয়েও মাহরিন ছিলেন প্রচারবিমুখ ও নিঃস্বার্থ। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অসুস্থতার সময়ও তিনি নীরবে কারাগারে খাবার পৌঁছে দিতেন, কখনও নিজেকে পরিচিত করিয়ে দিতেন না।

মৃত্যুর আগে স্বামীর সঙ্গে শেষ কথা বলেছিলেন মাহরিন। স্বামী মনছুর হেলাল বলেন, আমি মাহরিনকে জিজ্ঞেস করি—তুমি কেন এমন করলা? সে বলে—আমার বাচ্চারা চোখের সামনে আগুনে পুড়ে মরবে, এটা আমি মেনে নিতে পারিনি।

তিনি বলেন, ভাই, তার শরীর পুরো পুড়ে গিয়েছিল। শুধু একটু কথা বলতে পারছিল। শেষে বলল—আমার ডান হাতটা শক্ত করে ধরো... তোমার সাথে আর দেখা হবে না। এরপর শুধু বললেন—আমার বাচ্চাদের দেখো... ওদের তুমি ফেলে দিও না।

মঙ্গলবার, ২২ জুলাই নীলফামারীর জলঢাকার বগুলাগাড়িতে দাফন হয় এই সাহসী নারীর। আজ পুরো দেশ শোকাহত, সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে আলোচনা: জিয়া যেমন নিজের প্রাণ দিয়েছিলেন দেশের জন্য, তেমনি তার ভাতিজিও প্রাণ দিলেন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য।



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top