শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২

ডাকসু নির্বাচনে ভরাডুবি ছাত্রদলের, বিপুল জয় শিবিরপন্থিদের

মিঠু মুরাদ | প্রকাশিত: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫:২১

ফাইল ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৮তম কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ভরাডুবির শিকার হয়েছে বিএনপি-সমর্থিত ছাত্রদল। ২৮টি কেন্দ্রীয় পদের মধ্যে একটিতেও জয় পায়নি তারা। অন্যদিকে, ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ ভিপি, জিএস, এজিএসসহ ২৩টি পদে বিজয়ী হয়েছে।

এটি ছিল আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের প্রথম নির্বাচন। ফলে ডাকসু নির্বাচনকে ঘিরে শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক মহলে ছিল ব্যাপক আগ্রহ। কিন্তু দীর্ঘ সময় ক্যাম্পাসে নিষ্ক্রিয় থাকার কারণে ছাত্রদল বড় ধরনের ব্যর্থতার মুখে পড়ে।

ডাকসুর শীর্ষ তিন পদে লড়েন ছাত্রদলের তিন পরিচিত মুখ— আবিদুল ইসলাম খান, শেখ তানভীর বারী হামিম ও তানভীর আল হাদী মায়েদ। তবে তারা কেউই জিততে পারেননি।

বিশ্লেষকদের মতে, ছাত্রদলের পরাজয়ের পেছনে মূল কারণ সাংগঠনিক দুর্বলতা, দীর্ঘ অনুপস্থিতি, নেতৃত্ব সংকট, প্রচারণার ঘাটতি এবং শিক্ষার্থীদের মানসিকতার পরিবর্তন বুঝতে না পারা। নির্বাচনী কৌশল নির্ধারণেও তারা পিছিয়ে ছিল।

অন্যদিকে, ছাত্রশিবির দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও কৌশলগত কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আস্থা অর্জন করেছে। কোচিং সেন্টার, ভর্তি সহায়তা, সেবামূলক কার্যক্রম, মাসব্যাপী ইফতার আয়োজন, পানির ফিল্টার বসানো, ওষুধ সরবরাহের মতো কার্যক্রমের মাধ্যমে তারা শিক্ষার্থীদের কাছে ইতিবাচক ভাবমূর্তি গড়ে তুলেছে। একইসঙ্গে নারী ও অমুসলিম প্রার্থী রাখা এবং অনলাইন-অফলাইন প্রচারণায় আধুনিক কৌশল গ্রহণ করাও তাদের বিজয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে।

ডাকসু নির্বাচনে ভিপি, জিএস, এজিএসসহ ২৮টি পদের মধ্যে ২৩টিতেই বিজয়ী হন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট প্যানেলের প্রার্থীরা।

ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন,

“শিক্ষার্থীদের পালস বোঝার চেষ্টা করেছি আমরা। তারা যে ধরনের পরিবেশ চায়, শিবির সেই ধরনের কর্মসূচি গ্রহণের চেষ্টা করছে।”

অন্যদিকে, ছাত্রদল স্বীকার করেছে যে তাদের নেতৃত্ব ও প্রচারণায় দুর্বলতা ছিল। সংগঠনটির সভাপতি রাকিবুল ইসলাম জানিয়েছেন, ফলাফল পর্যালোচনা করে ব্যর্থতার কারণ খুঁজে দেখা হচ্ছে।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, পুরোনো ধারার রাজনীতিতে আটকে থাকার কারণে ছাত্রদল সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে। অপরদিকে, শিবির সরাসরি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ ও কল্যাণমুখী কার্যক্রমের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান শক্ত করেছে।



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top