শনিবার, ২ আগস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২

মা-বাবার সঙ্গে সন্তানের কথা বলার শিষ্টাচার

নিশি রহমান | প্রকাশিত: ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, ২৩:৪২

ছবি: সংগৃহীত

পরিবার এমন জায়গা, যা মানুষকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রাখে মায়ার বাঁধনে। কখনও এই বাঁধন ছিঁড়ে গেলে মানুষের শেকড়টাই যেন উপড়ে যায়। আর বার্ধক্য হলো, মানবজীবনের এক অনিবার্য বাস্তবতা। বেঁচে থাকলে প্রত্যেকেই বৃদ্ধ হয়, এটা আল্লাহর অমোঘ বিধান। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমতে থাকে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা। শরীরে বাসা বাঁধে নানা অসুখ-বিসুখ। এই অক্ষমতার কারণেই অবহেলার চোরাবালিতে নিক্ষিপ্ত হোন বৃদ্ধরা। কখনো তাঁরা শিকার হন সন্তানের অবহেলা, অযত্ম ও দুর্ব্যবহারের। কখনো আবার তাঁরা শিকার হন অমানবিক নির্যাতনের। শেষ পর্যন্ত কারো কারো তো ঠিকানা হয় বৃদ্ধাশ্রমে।

ইহকাল ও পরকালের কল্যাণ লাভে মা-বাবার সঙ্গে সন্তানের সুসম্পর্ক বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামে তাদের আনুগত্যের পাশাপাশি সব সময় বিনম্র ভাষায় কথা বলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আপনার রব আদেশ দিয়েছেন, তিনি ছাড়া আর কারো ইবাদত না করতে এবং মা-বাবার প্রতি সদ্ব্যবহার করতে, তাদের একজন বা উভয়ে আপনার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হলে তাদের উফ শব্দও বলোও না এবং তাদের ধমক দিয়ো না, তাদের সঙ্গে সম্মানসূচক কথা বলো। মমতাপূর্ণ আচরণের মাধ্যমে তাদের প্রতি বিনয়ী হও এবং বলো, হে আমার রব, তাদের প্রতি দয়া করো যেভাবে তারা আমাকে প্রতিপালন করেছিলেন।’

উল্লিখিত আয়াতে আল্লাহর আনুগত্যের নির্দেশনার পর মা-বাবার বিষয়ে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শিষ্টাচারের কথা বলেছেন। নিম্নে তা দেয়া হলো____

আরও পড়ুন>>> সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি প্রকাশ করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন

মা-বাবার সঙ্গে সদাচার : মা-বাবার সঙ্গে সদাচার উত্তম আমলগুলোর মধ্যে অন্যতম। এর মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা হয়। আবদুল্লাহ বিন মাসউদ (রা.) বর্ণনা করেছেন, আমি রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করেছি, কোন কাজ আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয়? উত্তরে তিনি বলেন, ‘যথাসময়ে নামাজ পড়া।’ বলা হলো, অতঃপর কোনটি? তিনি আরও বললেন, ‘অতঃপর মা-বাবার সঙ্গে সদাচার।’ বলা হলো, অতঃপর কোনটি? তিনি বললেন, ‘আল্লাহর পথে জিহাদ করা।’ তিনি আমাকে এই কয়েকটি বিষয় বলেছেন। আমি আরো জিজ্ঞাসা করলে তিনি আরো বলতেন।

সন্তানের জন্য হুঁশিয়ারি : মা-বাবার সন্তুষ্টিতে ইহকাল ও পরকালীন সাফল্য রয়েছে। মা-বাবার সঙ্গে দুর্ব্যবহারকারীদের জন্য হুঁশিয়ারি রয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেছেন, ওই ব্যক্তি ধ্বংস হোক। জিজ্ঞাসা করা হলো, হে আল্লাহর রাসুল, কোন ব্যক্তি? তিনি বললেন, ‘যে ব্যক্তি বাবা ও মা উভয়কে বা একজনকে বৃদ্ধাবস্থায় পেয়েছে কিন্তু জান্নাতে প্রবেশ করতে পারেনি।’

অমুসলিম মা-বাবার সঙ্গে সদাচার : অমুসলিম মা-বাবার সঙ্গেও সদাচারের কথা বলা হয়েছে। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমার মা-বাবা যদি তোমাকে পীড়াপীড়ি করে আমার সঙ্গে কাউকে অংশীদার করতে যে বিষয়ে তোমার জ্ঞান নেই, তুমি তাদের কথা মানবে না, তবে দুনিয়ায় তাদের সঙ্গে ন্যায়সংগতভাবে বসবাস কোরো...।’

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top