পবিত্র শবেবরাত আজ
Nasir Uddin | প্রকাশিত: ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৮:৩৪
                                        আজ শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) পবিত্র শবেবরাত। হিজরি সনের শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতটি মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন শবেবরাত বা সৌভাগ্যের রজনী হিসেবে পালন করে থাকেন। ফারসি শব্দ ‘শব’-এর অর্থ রাত এবং আরবি শব্দ ‘বরাত’-এর অর্থ মুক্তি বা ভাগ্য। অর্থাৎ শবেবরাত হলো ভাগ্যের রাত বা মুক্তির রাত। রাতটি ‘লাইলাতুল বরাত’ হিসেবেও পরিচিত। ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের বড় অংশ এ রাতকে মহিমান্বিত রজনী হিসেবে পালন করেন। এ উপলক্ষে আগামীকাল শনিবার সরকারি ছুটি থাকবে।
ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা রমজানের রোজা শুরুর দুই সপ্তাহ আগে চাঁদ দেখে শবেবরাত পালন করেন। এ রাতে বান্দাদের জন্য অশেষ রহমতের দরজা খুলে দেন আল্লাহতায়ালা। মহিমান্বিত এই রাতে মুসলমানরা পরম করুণাময় আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের আশায় নফল নামাজ, পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত ও জিকিরে মগ্ন থাকেন। অতীতের পাপ ও অন্যায়ের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা এবং ভবিষ্যৎ জীবনের কল্যাণ কামনা করে মোনাজাত করেন। এছাড়া সন্ধ্যার পর অনেকে কবরস্থানে যান এবং আপনজনদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করেন।
ইসলামি চিন্তাবিদরা বলছেন, মুক্তি কিংবা ভাগ্যের রাত উপলক্ষ্যে বিশ্বনবি (সা.)-এর জীবনী নিয়ে আলোচনা হয়। সুবিধাবঞ্চিত লোকজনের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়। কোথাও ধর্মীয় মহফিল হয়। কেউ কেউ বাড়িতে শবেবরাত উপলক্ষ্যে হালুয়া-রুটি তৈরি করে দারদ্রদের মধ্যে বিলি করেন। পূর্ণতা ও মুক্তির আশায় রাতভর মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা এবং বাসাবাড়িতে নামাজ পড়াসহ ইবাদত করা হয়।
পবিত্র শবেবরাত মুসলমানদের কাছে পবিত্র রমজানের আগমনি বার্তাও নিয়ে আসে। শাবানের পর আসে পবিত্র রমজান মাস। তাই শবেবরাত থেকেই কার্যত রমজানের প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়।
এ রাতের বিষয়ে রাসুলে পাক (সা.) বলেছেন, শবেবরাতের রাতটি হলো অর্ধ শাবানের রাত। মহান আল্লাহ এই রাতে তাঁর বান্দার সব প্রার্থনা মনোযোগ সহকারে শোনেন। যারা ক্ষমাপ্রার্থী, তাদের পাপ ক্ষমা করে দেন। আর যারা অনুগ্রহপ্রার্থী, তাদের অনুগ্রহ করেন, বরকত প্রদান করেন।
এদিকে পবিত্র শবেবরাত ১৪৪৬ হিজরি উপলক্ষে আজ শুক্রবার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের (ইফা) উদ্যোগে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ওয়াজ, দোয়া মাহফিল, পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত, হামদ নাতসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
ইফা আয়োজিত অনুষ্ঠানমালার মধ্যে রয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ৩৫ মিনিটে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পবিত্র কোরআন ও হাদিসের আলোকে লাইলাতুল বরাতের শিক্ষা এবং করণীয় বিষয়ে ওয়াজ করবেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে লাইলাতুল বরাতের ফজিলত ও তাৎপর্য বিষয়ে ওয়াজ করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আ. ছালাম খান। রাত ৮টা ৫০ মিনিটে লাইলাতুল বরাতের ফজিলত ও তাৎপর্য তুলে ধরে ওয়াজ করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নসের গভর্নর ও তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) ড. খলিলুর রহমান মাদানি।
রাত সাড়ে ৯টায় পবিত্র কোরআন ও হাদিসের আলোকে লাইলাতুল বরাতের শিক্ষা এবং করণীয় সম্পর্কে ওয়াজ করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নসের গভর্নর ও চরমোনাই আহসানাবাদ রশিদিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সৈয়দ মোহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানি।
রাত সোয়া ২টায় নফল ইবাদতের গুরুত্ব ও ফজিলত নিয়ে ওয়াজ করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুফতি মিজানুর রহমান এবং ভোর ৫টা ৫০ মিনিটে আখেরি মোনাজাত। মোনাজাত পরিচালনা করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুফতি মুহিবুল্লাহিল বাকী। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বেসরকারি টিভি চ্যানেল ও রেডিও এ উপলক্ষে ধর্মীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে।

                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।