বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২

ইসলামে বিয়েতে ‘তিনবার কবুল’ বলার কোনো নিয়ম আছে কি?

ধর্ম ডেস্ক | প্রকাশিত: ৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৭:৪৩

সংগৃহীত

বিয়ে মানবজীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও পবিত্র বন্ধন। এটি মানুষকে শালীন, পরিপূর্ণ ও বরকতময় জীবনের পথে নিয়ে যায়। ইসলামে বিয়েকে শুধু সামাজিক বন্ধন নয়, বরং একটি ইবাদত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। যে ব্যক্তি প্রাপ্তবয়স্ক এবং বিয়ের সামর্থ্য রাখে, তার জন্য দেরি না করে বিয়ে করা সুন্নত ও ইমানি দায়িত্ব।

নবী করিম (সা.) বলেছেন, “হে যুবসমাজ, তোমাদের মধ্যে যার বিয়ের সামর্থ্য আছে, সে যেন বিয়ে করে। কেননা বিয়ে দৃষ্টিকে সংযত রাখে ও লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। আর যার সামর্থ্য নেই, সে যেন রোজা রাখে; কারণ রোজা যৌবনের খায়েশ দমন করে।” (বোখারি: ৫০৬৫, মুসলিম: ১৪০০)

এই হাদিস থেকে স্পষ্ট হয়, বিয়ের জন্য নির্দিষ্ট কোনো দিন, তারিখ বা মাস নির্ধারিত নেই। বরং যখন সামর্থ্য আসে, তখন বিলম্ব না করে বিয়ে করা উত্তম।

বিয়ের আগে ভালোভাবে পাত্র বা পাত্রী দেখে নেওয়া নবী করিম (সা.)–এর সুন্নত। জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, “যখন তোমাদের কেউ কোনো নারীকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়, তখন যেন এমন কিছু দেখে নেয়, যা তাকে বিয়েতে আগ্রহী করে তোলে।” (আবু দাউদ: ২০৮২)

অন্য এক হাদিসে মুগিরা বিন শোবা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে বলেছেন, “তুমি কি তাকে দেখেছ?” আমি বললাম, “না।” তখন তিনি বললেন, “তাকে দেখে নাও; এতে দাম্পত্য জীবনে ভালোবাসা দৃঢ় হবে।” (তিরমিজি: ১০৮৭)

তবে বিয়ের সময় অনেক এলাকায় প্রচলিত একটি প্রথা দেখা যায়—পাত্রকে তিনবার “কবুল” বলতে হয়। অনেকেই মনে করেন, তিনবার কবুল না বললে বিয়ে সহিহ হয় না। কিন্তু ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে এ বিশ্বাসের কোনো ভিত্তি নেই।

দেশের জনপ্রিয় ইসলামি গবেষণা পত্রিকা ‘মাসিক আল কাউসার’–এর বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, এটি সম্পূর্ণ মনগড়া ও অশরিয়তি রীতি। শরিয়ত অনুযায়ী সাক্ষীদের উপস্থিতিতে ইজাব (প্রস্তাব)–এর পর একবার কবুল বললেই বিয়ে সম্পন্ন হয়ে যায়।

ফিকহগ্রন্থ ফাতাওয়ায়ে শামি (৩/৯) ও ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি (১/৩৭০)–তেও উল্লেখ আছে—ইসলামে বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার জন্য তিনবার কবুল বলার কোনো শর্ত নেই। একবার স্পষ্টভাবে কবুল বললেই তা যথেষ্ট।

 

নিফ্লা৭১/ওতু



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top