রবিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৫, ২৭ আশ্বিন ১৪৩২

আফগানিস্তানকে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর কঠোর হুঁশিয়ারি

ওলিউল্লাহ তুহিন | প্রকাশিত: ১২ অক্টোবর ২০২৫, ১৬:৩৮

সংগৃহীত

আফগানিস্তান যদি নিষিদ্ধ জঙ্গি গোষ্ঠী তেহরিক-ই তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)-কে সহায়তা প্রদান বন্ধ না করে, তাহলে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক আরও অবনতি ঘটবে— এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহম্মদ আসিফ।

‎শনিবার পাকিস্তানের বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল জিও নিউজ–কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন,

‎“আফগানিস্তানের সঙ্গে কখনও আমাদের আদর্শ প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ক ছিল না এবং এর দায় আমাদের নয়। একজন ভালো প্রতিবেশীর মতো পাকিস্তান বরাবরই সম্মান ও মর্যাদাপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করতে চেয়েছে; কিন্তু আফগানিস্তান সবসময় পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদ উসকে দিতে চেয়েছে এবং নিজেদের ভূখণ্ডকে সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আশ্রয়ে পরিণত করেছে।”

‎তিনি আরও বলেন,

‎‎“আমরা সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে আফগানিস্তানের সহযোগিতা চাই। কাবুল যদি সহযোগিতা করে, তাহলে ভালো; না করলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।”

‎পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টা পরেই খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্ত এলাকায় শুরু হয় ব্যাপক সংঘর্ষ। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দাবি, আফগান সেনারা ‘বিনা উসকানিতে’ হামলা চালিয়েছে।

‎অন্যদিকে আফগানিস্তানের দাবি, গত বৃহস্পতিবার রাতে পাকিস্তানের বিমান হামলায় কাবুলে সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে ইসলামাবাদ। ওই হামলার জবাব দিতেই সীমান্তে পাল্টা হামলা চালানো হয়েছে।

‎শনিবার রাতভর পাকিস্তানের আঙ্গুর আড্ডা, বাজাউর, কুররম, দির, চিত্রাল ও বারামচা এলাকায় দুই দেশের সেনাদের মধ্যে তীব্র গোলাগুলি চলে। পাকিস্তানের আন্তঃবিভাগ সংযোগ দপ্তর (ISPR) জানিয়েছে, আফগানিস্তানের ১৯টি সেনা পোস্ট দখল করেছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। সংঘর্ষে ব্যবহৃত হয়েছে হালকা ও ভারী আগ্নেয়াস্ত্র, ট্যাংক, ড্রোন এবং গোলাবারুদ।

‎অন্যদিকে আফগান সরকারের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ পাল্টা বিবৃতিতে দাবি করেন, আফগান বাহিনী পাকিস্তানের ২৫টি সেনা পোস্ট দখল করেছে এবং এতে পাকিস্তানের অন্তত ৫৮ জন সেনা নিহত হয়েছেন।

‎সংঘাতের মূল উৎস গত বৃহস্পতিবার রাতে পাকিস্তানের বিমান হামলা। পাকিস্তান দাবি করেছে, টিটিপি নেতাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ের কারণে তারা কাবুলে অভিযান চালাতে বাধ্য হয়।

‎গুঞ্জন রয়েছে, ওই হামলায় টিটিপি প্রধান নূর ওয়ালি মেসুদ নিহত হয়েছেন। তার সঙ্গে নিহত হয়েছেন ক্বারী সাইফুল্লাহ মেসুদসহ একাধিক সহযোগী, যাদের একজনকে টিটিপির পরবর্তী প্রধান হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছিল।



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top