বৃহঃস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ছয় মাসে কোরআনের হাফেজ ১৩ বছরের শরিফুল

Nasir Uddin | প্রকাশিত: ২২ মে ২০২৫, ১৬:৩২

ফাইল ছবি

মাত্র ১৩ বছর বয়সেই পবিত্র কোরআনের হাফেজ হয়েছে রংপুরের শরিফুল ইসলাম। মাত্র ছয় মাসে হিফজ শেষ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে এই শিশু। বর্তমানে সে জায়গীরহাট পুরাতন গরুহাটি সংলগ্ন দারুত তাকওয়া মডেল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী।

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার লতিবপুর ইউনিয়নের ঈদুলপুর গ্রামের আজিজার-জুলেখা দম্পতির ছেলে শরিফুল ইসলাম। অভাব অনটনের সংসারে বেড়ে ওঠে সে। সাত বছর বয়সেই হারিয়েছেন বাবাকে। কয়েক বছর না যেতেই তার মা চলে যান নতুন সংসারে। তখন ছোট্ট শরিফুলের জন্য এগিয়ে আসেন এক মাদরাসা শিক্ষক। বছরখানেক আগে তাকে তার মাদরাসায় ভর্তি করে দেন। কায়দা ও আমপারা শেখার পর মাত্র ছয় মাসেই পবিত্র কোরআনের হিফজ সম্পন্ন করেছে সেই শরিফুল।

স্থানীয়রা জানান, শরিফুলের বাবা মারা যাওয়ার পর তার পড়াশোনা প্রায় অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। এমন সময় পাশে দাঁড়ান দারুত তাকওয়া মডেল মাদ্রাসার পরিচালক মুফতি হাসান আহমেদ আফেন্দী। তিনি শরিফুলকে নিজের খরচে গত বছরের ডিসেম্বরে মাদ্রাসায় ভর্তি করান। শরিফুল প্রথমে কায়দা ও আমপারা শেখে। এরপর মাত্র ছয় মাসেই পবিত্র কোরআনের হিফজ সম্পন্ন করে। তার এমন অর্জনে খুশি মা জুলেখা বেগম, মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ও এলাকাবাসী।

এদিকে স্বামীর মৃত্যুর পর নতুন সংসারে চলে যাওয়া শরিফুলের মা জুলেখা বেগম সন্তানের ভরণপোষণ দিতে পারেননি। দিতে পারেরনি পড়ালেখার অর্থের যোগান। কিন্তু সন্তানের টানে মাঝেমধ্যে ঠিকই ছুটে আসতেন মাদরাসায়। খোঁজ রাখতেন শরিফুলের। সন্তানের এই অর্জনে খুশি মা জুলেখা। এ জন্য তিনি মাদরাসার পরিচালক হাসান আহমেদ আফেন্দীর আন্তরিকতা, প্রচেষ্টা এবং সহযোগিতাকে স্মরণ করে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

মা জুলেখা বেগম বলেন, ‘আমি সন্তানকে লালন-পালনের সামর্থ্য না রাখলেও মাঝেমধ্যে দেখতে যেতাম। আজ শরিফুল হাফেজ হয়েছে, এটা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় আনন্দ। আমি মাদ্রাসার পরিচালক হাসান আহমেদ আফেন্দীর প্রতি কৃতজ্ঞ।’

দারুত তাকওয়া মডেল মাদ্রাসার পরিচালক মুফতি হাসান আহমেদ আফেন্দী বলেন, ‘শরিফুল খুবই মেধাবী ও উদ্যমী। আমি তাকে ছোটবেলা থেকেই সঙ্গে রেখেছি। মাত্র ছয় মাসেই সে পুরো কোরআন হিফজ করেছে। আমরা সবাই তার অর্জনে আনন্দিত।’

তিনি আরও বলেন, শরিফুলের এমন অর্জনে আমাদের সবাই খুবই খুশি। তার এই সাফল্যে দারুত তাকওয়া মডেল মাদরাসার নাম উজ্জ্বল হয়েছে। আমি তার সর্বোচ্চ উন্নতি কামনা করছি। মহান আল্লাহ তাকে অনেক বড় আলেম হিসেবে কবুল করুন সেই দোয়া করি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. সাজু মিয়া বলেন, ‘ছেলেটি খুব মেধাবী। আমরা গ্রামবাসী হিসেবে গর্বিত। সরকার যদি তাকে সহযোগিতা করে, তাহলে সে আরও অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারবে।’

শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি বড় হয়ে একজন আলেম ও ইসলামের খাদেম হতে চাই। আল্লাহ যেন আমাকে কবুল করেন।’



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top