কক্সবাজার সৈকতেই নিখোঁজ ১৬০ শিশু উদ্ধার

নিউজফ্ল্যাশ ডেস্ক | প্রকাশিত: ২ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:১৩

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় পর্যটন স্পটগুলোতে সপরিবারে বেড়াতে যাওয়া পর্যটকদের মধ্য থেকে দলছুট হয়ে শিশুদের হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা শঙ্কায় ফেলেছে ভ্রমণপ্রেমী অভিভাবকদের। বিশেষ করে দেশীয় পর্যটনের সবচেয়ে বড় গন্তব্য কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে শিশু নিখোঁজের ঘটনাই বেশি ঘটছে। এসব ঘটনায় পর্যটকদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট ট্যুরিস্ট পুলিশও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশের প্রধান কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ১ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২১ মাসে দেশের বিভিন্ন পর্যটন স্পটে দলছুট হয়ে নিখোঁজ ৪৪৩ জন শিশুকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। এর মধ্যে শুধু চলতি বছরের ৯ মাসে কক্সবাজার সৈকত থেকে উদ্ধার হয়েছে ১৬০ শিশু।

ট্যুরিস্ট পুলিশের মিডিয়া সেলের দায়িত্বে থাকা সহকারী পুলিশ সুপার ফুয়াদ সাকিব বলেন, “শিশু নিখোঁজের ঘটনা ভ্রমণ আনন্দকে বিষাদে পরিণত করে। এজন্য আমরা সবসময় সতর্ক ও তৎপর থাকি। তবে অভিভাবকদেরও সচেতন হতে হবে।”

পুলিশের তথ্য বলছে, ২০২৩ সালে বিভিন্ন পর্যটন স্পট থেকে হারিয়ে যাওয়া ৩৭১টি শিশু উদ্ধার ও ২৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করে ট্যুরিস্ট পুলিশ।

ট্যুরিস্ট পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মনে করেন, শিশুরা কৌতূহলী ও চঞ্চল স্বভাবের হওয়ায় নতুন পরিবেশে দলছুট হয়ে যায়। এজন্য অভিভাবকদের দায়িত্বশীলতা বাড়াতে হবে।

জানতে চাইলে ট্যুরিস্ট পুলিশ প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. মাইনুল হাসান বলেন, “প্রায় হাজারের বেশি শিশুহারানোর ঘটনার রেকর্ড রয়েছে। কোনো শিশুকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার মুহূর্তটি আমাদের জন্য সবচেয়ে আবেগময়। নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন ভ্রমণ নিশ্চিত করতে ট্যুরিস্ট পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করছে।”

এ বিষয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আপেল মাহমুদ জানান, শিশু হারানোর ঘটনা রোধে ১০ সদস্যের বিশেষ উদ্ধার টিম গঠন করা হয়েছে। সৈকতে স্থাপন করা হয়েছে ২৭টি সিসিটিভি ক্যামেরা। এসব ক্যামেরা ও বাইনোকুলারের সাহায্যে মনিটরিং করা হয় শিশুদের ওপর।
তিনি আরও বলেন, “শিশু হারানোর ঘটনায় এবার অভিভাবকদেরও জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে। উদাসীনতার কারণে শিশুহারা হলে থানায় জিডি ও মুচলেকা দিতে হবে, তারপরই শিশুকে হস্তান্তর করা হবে।”

প্রসঙ্গত, দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ২০১৩ সালে গঠিত ট্যুরিস্ট পুলিশ বর্তমানে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা, বরিশাল ও রাজশাহী বিভাগের ১১টি অঞ্চলে সেবা দিয়ে আসছে। তবে পর্যটকের অনুপাতে জনবল স্বল্পতা ইউনিটটির বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে আছে।

সূত্র: ইত্তেফাক



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top