সোমবার, ৫ মে ২০২৫, ২১ বৈশাখ ১৪৩২

পুরো আকাশে তখন অন্ধকারের কালো মেঘ, নির্মম কষ্ট যন্ত্রণার

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ৪ মে ২০২৫, ২১:৫০

ছবি: সংগৃহীত

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আলোচনার কেন্দ্রে সবসময়। কারণ এটা রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। গণমাধ্যম তথ্যের প্রবেশদ্বার ও মানবাধিকারের অনুঘটক। আর তথ্যের স্বাধীনতা। এটা ছাড়া মানুষ চলবে কী করে। এটা তার মৌলিক মানবাধিকার।

সংবিধানের ৩৯(১) অনুচ্ছেদে চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে। এবং ৩৯(২) অনুচ্ছেদে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে। তবে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা মানে শর্তহীন স্বাধীনতা নয়। এটাও মনে রাখতে হবে।

সাংবাদিকদের দায়িত্ব কী। শুধু রিপোর্টিংয়ে সীমাবদ্ধ থাকা। তা তো নয়। বরং এটি একটি নৈতিক দায়িত্ব। সত্য যাচাই ছাড়া মনগড়া তথ্য প্রচার করা যায় কী করে। এই এখতিয়ার সাংবাদিককে কেউ দেয়নি।

ষড়যন্ত্র তত্ত্ব এবং ক্লিক-বেইট শিরোনাম। এ ধরনের সাংবাদিকতা তথ্যের বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। ফ্যাক্ট চেকিং বা তথ্য যাচাই তাই অপরিহার্য। সেবার মানসিকতা নিয়ে কাজ করলে সবার মঙ্গল।

সাংবাদিক হবেন আর সংবাদ শুদ্ধি লড়াইয়ে নামবেন না। তা তো হয় না। সাংবাদিকগণ অবধারিতভাবে দলকানা হবেন না। সরকারঘেঁষা আনুগত্য সাংবাদিকতা লজ্জার। জবাবদিহি সাংবাদিকতা মুক্তির পথ।

উল্টোদিকে চিত্রটা ভীষণ ভয়ঙ্কর। নির্মম কষ্ট যন্ত্রণার। গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধের আশঙ্কা। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হামলা মামলা। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আক্রমণ। দখল বা খেয়ালখুশিমতো পরিচালনা। চাকরি নাই যখন তখন। এসব মুক্ত গণমাধ্যমের সম্ভাবনার জন্য অশনিসংকেত। এখন তো অটোক্রেসির হাত থেকে এসে মবোক্রেসির দৌরাত্ম্য।

অত:পর আসে বাকস্বাধীনতা। এটা হচ্ছে একটি কাণ্ডজ্ঞান। সৈয়দ শামসুল হক তার ‘মার্জিনে মন্তব্য’ বইতে কী লিখেছেন জানেন। আপনি কী লিখবেন সেটি যেমন জরুরি। তেমনি কী লিখবেন না। সেটি আরও জরুরি। প্রত্যেকের নিজস্ব চিন্তাভাবনা তুলে ধরার অধিকার আছে। নিজের দৃষ্টিভঙ্গি বিনাবাধায় জানানোর স্বাধীনতা আছে।

কারণ বাক স্বাধীনতা না থাকলে কী হয় জানেন তো। গণতন্ত্র বল্গাহীন দলতন্ত্রে পরিণত হয়। সমাজের মানসরাজ্যে বিবেকের শেষ দংশন ঘটে। বাক-স্বাধীনতা আটকা পড়লে প্রগতি মুখ থুবড়ে পড়ে। অনাচার দখল করে সুন্দরের আসন। তখন মানুষ আর মানুষ থাকে না। পুরো আকাশে তখন অন্ধকারের কালো মেঘ।



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top