পদ্মার চরে পুলিশের বিশেষ অভিযান, গ্রেপ্তার ‘কাকন বাহিনী’র ২১ সদস্য

নিউজফ্ল্যাশ ডেস্ক | প্রকাশিত: ৯ নভেম্বর ২০২৫, ১৫:০৬

ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী, পাবনা, নাটোর ও কুষ্টিয়ার পদ্মা চরে রোববার (৯ নভেম্বর) সকাল থেকে শুরু হয়েছে পুলিশের বিশেষ অভিযান। চার জেলার এই যৌথ অভিযানে অংশ নিয়েছেন রাজশাহী ও খুলনা রেঞ্জের দেড় হাজার পুলিশ সদস্য।

রাজশাহী রেঞ্জের অধীন তিন জেলা—রাজশাহী, পাবনা ও নাটোরে অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন ফার্স্ট লাইট’। এতে অংশ নেন প্রায় ১,২০০ পুলিশ সদস্য। খুলনা রেঞ্জের অধীনে কুষ্টিয়ায় পরিচালিত হয় নামহীন আরেকটি অভিযান, যেখানে অংশ নেন আরও ৩০০ সদস্য।

সাম্প্রতিক সময়ে পদ্মার চরে ‘কাকন বাহিনী’ নামে একটি সন্ত্রাসী দলের তৎপরতা স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করেছিল। অভিযোগ রয়েছে, এই বাহিনীর সদস্যরা কথায় কথায় গুলি চালায়, মানুষ হত্যা করে, ফসল ও বালু লুট করে, এমনকি অপহরণ ও চাঁদাবাজিও চালায়।

গত ২৭ অক্টোবর চর এলাকায় ফসল কাটাকে কেন্দ্র করে এই বাহিনীর গুলিতে তিন কৃষক নিহত হন। ঘটনাটির পর বাহিনীর প্রধান হাসিনুজ্জামান কাকনসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানায় মামলা হয়। এখন পর্যন্ত রাজশাহী, নাটোর, পাবনা ও কুষ্টিয়ায় এ বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে মোট ছয়টি মামলা দায়ের হয়েছে।

রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান জানান, ভোর থেকেই অভিযান শুরু হয়। পদ্মা চরাঞ্চলে একযোগে তল্লাশি চালানো হয়। এ সময় ৫টি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র, মাদক ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ‘কাকন বাহিনী’র ২১ সদস্যকে।

নাটোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম জানান, নদীপথ ও স্থলপথে একযোগে অভিযান চালানো হয়। লালপুর সীমান্তবর্তী চার দিয়াড় বাহাদুরপুর, চর জাজিরা ও চর লালপুর এলাকায় ১৪টি নৌকায় ১০টি দলে ভাগ হয়ে অভিযান চলে। আটক ব্যক্তিদের আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে এবং জব্দ করা মালামালের তালিকা তৈরি করা হয়েছে।

চর দিয়াড় বাহাদুরপুরের স্থানীয় মৎস্যজীবী আনোয়ার হোসেন বলেন, “পুলিশ যাদের ধরে নিয়ে গেছে, তারা প্রায় সবাই কাকন বাহিনীর সঙ্গে জড়িত।”

খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (ক্রাইম অ্যান্ড অবস্) শেখ জয়নুদ্দীন ও কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে পদ্মার চরে সকাল ৫টা থেকে অভিযান শুরু হয়। এতে অংশ নেয় তিন শতাধিক পুলিশ সদস্য।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অবস্) ফয়সাল মাহমুদ বলেন, “পদ্মার বিভিন্ন চরে লুকিয়ে থাকা কাকন বাহিনীসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী দলকে ধরতেই এ অভিযান চলছে। ড্রোন দিয়ে কাশবন, কলাবাগান ও জঙ্গলের ভেতর নজরদারি চালানো হচ্ছে।”

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযান শেষ না হওয়া পর্যন্ত পদ্মা চরাঞ্চলে কড়া নিরাপত্তা বলয় জারি থাকবে।



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top