বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ পৌষ ১৪৩২

খালেদা জিয়ার মৃত্যু থেকে শেখ হাসিনার ফাঁসি—২০২৫ যা দেখলো

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫:৪০

সংগৃহীত

একই বছরে, এক সাবেক প্রধানমন্ত্রী মারা গেলেন, আরেক সাবেক প্রধানমন্ত্রী পেলেন মৃত্যুদণ্ড। একদিকে রাষ্ট্রীয় শোক, অন্যদিকে লকডাউন, আগুন, ককটেল। এই গল্পটা কোনো সিনেমার না। এই গল্পটা—বাংলাদেশের, ২০২৫ এর। বিদায়ী সালটা ছিল কেবল রাজনীতির জন্য নয়—বরং ইতিহাসের জন্য লেখা এক অস্থির অধ্যায়।

বছরের একেবারে শেষ প্রান্তে, ৩০ ডিসেম্বর, মারা যান বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক। একটি অধ্যায়ের সমাপ্তি। এর আগে, নভেম্বর মাসে, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়—যা নিয়ে দেশ ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক মহলেও উদ্বেগ।

এই দুই ঘটনার মাঝখানে—নির্বাচনের তফসিল, জুলাই ঘোষণাপত্র, জুলাই সনদ নিয়ে তীব্র রাজনৈতিক বিভাজন। ঢাকার উত্তরায় বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ৩৬ জনের মৃত্যু—যাদের বেশিরভাগই শিশু। একটা দেশ স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল।

আর রাজপথ? শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি, তার মৃত্যু, প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলা। মব ভায়োলেন্স, সংখ্যালঘু নির্যাতন— সব মিলিয়ে এক ভয়ংকর প্রশ্নবোধক বছর। আর বছরের শেষে—১৭ বছর পর দেশে ফেরেন তারেক রহমান। সমর্থকদের ঢল। শান্ত থাকার আহ্বান। তাহলে ২০২৫ আমাদের কী শেখালো? শক্তিশালী রাষ্ট্র না হলে—সংকট একের পর একই আসে।

এই বছরেই ঘোষণা আসে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের। দীর্ঘ অনিশ্চয়তার পর তফসিল ঘোষণায় রাজনৈতিক অঙ্গনে সাময়িক স্বস্তি এলেও আস্থার সংকট কাটেনি। একইসঙ্গে আলোচনায় ছিল অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার প্রক্রিয়া, বিচার প্রশ্নে অগ্রগতি ও প্রশাসনিক সক্ষমতা।

গোপালগঞ্জে এনসিপির কর্মসূচি ঘিরে সংঘর্ষে প্রাণহানি দেখিয়ে দেয়, ক্ষমতার পরিবর্তন হলেও সহিংস রাজনীতির সংস্কৃতি সহজে ভাঙে না। বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, হাজার হাজার কোটি টাকার ক্ষতি—রাষ্ট্রের অবকাঠামোগত নিরাপত্তা নিয়েও নতুন প্রশ্ন তোলে।সব মিলিয়ে ২০২৫ ছিল শুধু ঘটনা প্রবাহের বছর নয়, বরং রাষ্ট্র, রাজনীতি ও সমাজ—তিনটিরই শক্তি ও দুর্বলতা একসঙ্গে উন্মোচিত হওয়ার বছর।



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top