সাংবাদিকরা চাকর নন, সেবক
সাংবাদিক হচ্ছেন, জ্যাক অব অল ট্রেডস, মাস্টার অব নান
রাজীব রায়হান | প্রকাশিত: ৩০ মে ২০২৫, ১৭:২১

সাংবাদিক হচ্ছেন, জ্যাক অব অল ট্রেডস, মাস্টার অব নান। মানে কোনও বিষয়ে বিশেষজ্ঞ নন, তবে সব বিষয়ে প্রাথমিক জ্ঞান আছে তার। যেমন জুতা সেলাই থেকে চন্ডীপাঠ। নখদর্পণে। সাংবাদিকতায় অব্যাহত জ্ঞান চর্চার কোনও বিকল্প হয় না। নিয়মিত চর্চায় না থাকলে হালনাগাদ থাকা সম্ভব হয় না।
মনে রাখতে হবে, সাংবাদিকতায় কোনও শর্টকাট রাস্তা নেই। কারণ প্রতিবেদনের জন্য সব তথ্য সহজলভ্য নয়। সংবাদ সংগ্রহের জন্য সাংবাদিককে প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়। কখনও অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়। বলা হয়, তথ্য সংগ্রহে ভিক্ষুকের মতো সাংবাদিকেরও পা-ই লক্ষ্মী।
সাংবাদিকতা পেশা নয়, পেশন। সেখানেই সাংবাদিকের আত্মতৃপ্তি, সবচেয়ে বড় পাওয়া। প্রতিবেদন যখন মানুষের কাজে লাগে। তখন সাংবাদিকের চেয়ে খুশি আর কেউ হয় না। তবে প্রতিবেদনের প্রতিদান কাম্য নয়। গণমাধ্যম জবাবদিহিতার উর্ধ্বে নয়। প্রথম জবাবদিহিতা গণমাধ্যমকর্মীর নিজের বিবেকের কাছে।
গণমাধ্যমকে বলা হয় রাষ্ট্রের পাহারাদার। সংবাদের সন্ধানে গণমাধ্যম কর্মীদের নিরন্তর ছুটে চলতে হয়। জনগণের কাছে রাষ্ট্রের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে খবরের পেছনে ছুটতে হয়। প্রতিভা না থাকলে প্রকৃত সাংবাদিক হওয়া যায় না। সাংবাদিকতা অর্থের বিনিময়ে পাওয়া চাকর-চামচাদের মতো নয়। মনে রাখতে হবে, সাংবাদিকরা চাকর নন, সেবক।
সংবাদ মানে ফ্যাক্ট। গণমাধ্যমের মূল দায়িত্ব হচ্ছে ফ্যাক্ট বলা। সাংবাদিকরা অনেক সময় নানা অভিযোগের তীরে বিদ্ধ হন। তাদের মিথ্যা ও অর্ধসত্য প্রকাশ গণমাধ্যমকে চ্যালেঞ্জে ফেলে দেয়। ক্লিকবেইট জার্নালিজম। সেগুলোর বিপরীতে দাঁড়িয়ে সত্য প্রতিষ্ঠার লড়াইটা জারি রাখতে হয়। না হলে পেশা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সংকট তৈরি হয় জনমনে। জাতির বিবেক সংকুচিত হলে সাধারণের অধিকারও সংকুচিত হয়।
তবে যে সাংবাদিকরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলেন। পড়ুয়া। সেই সাংবাদিকদের অধিকার ক্ষুণ্ন হলে তাদের পাশেতো কেউ দাঁড়ায় না। বরং সুযোগ পেলেই বিষোদ্গারের ডালি খুলে বসেন। যে সাংবাদিকরা মানবাধিকারের কথা লেখেন। সেই সাংবাদিকদের কেন বেতনের দাবিতেই রাজপথে দাঁড়াতে হয়। প্রশ্ন বহুদিনের।
গণমাধ্যম যদি শিল্প হয় তাহলে সৎ সংবাদকর্মীরা তার শিল্পী। কাটিং মাস্টার দিয়ে সাংবাদিকতা চলে না। তাদের গবেষক হতে হয়। থাকতে হয় সত্য প্রকাশের দুরন্ত সাহস। আর সেবার মানসিকতা। লেখার মধ্যে থাকতে হয় অনুরনন। প্রজ্ঞা ও দুরদৃষ্টি। সুচেতনার উন্মেষ। দায়িত্ব নিতে জানতে হয়। এভাবেই দর্শক মনে প্রতিষ্ঠা হয় সংবাদ।
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।