রাজনীতিতে নতুন অধ্যায়: একসঙ্গে প্রধানমন্ত্রিত্ব ও দলীয় নেতৃত্ব নয়

একই ব্যক্তি একসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী এবং দলীয় প্রধান থাকতে পারবেন না। এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। ঢাকা, ফরেন সার্ভিস একাডেমি। আজ মঙ্গলবার, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফার সংলাপে এ সিদ্ধান্ত জানান কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর পদে দলীয় প্রধান থাকতে পারবেন না—এই মতের সঙ্গে অধিকাংশ দল একমত হয়েছে। তবে, সবাই নয়। কিছু রাজনৈতিক দল এই সিদ্ধান্তের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে—যারা চাইলে জাতীয় সনদে নোট অব ডিসেন্ট বা ভিন্নমত যুক্ত করতে পারবেন।

বিষয়টি নিয়ে মতবিরোধ যেসব দল প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধানকে আলাদা দেখতে চায় তাদের মধ্যে রয়েছে: জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং আরও অনেকে। অন্যদিকে, যেসব দল এই সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ, তাদের মধ্যে রয়েছে: বিএনপি, এলডিপি, লেবার পার্টি, এনডিএম, ১২ দলীয় জোট এবং জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট। তাদের মতে—একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী, দলীয় প্রধান ও সংসদ নেতা থাকলে সমস্যা নেই।

আলী রীয়াজ আরও বলেন, আমাদের অনুরোধ, যারা ভিন্নমত দিয়েছেন, তারা চাইলে সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করতে পারেন। আজকের আলোচনায় আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল: তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে প্রস্তাবের চূড়ান্ত রূপ, নির্বাচন কমিশন, সরকারি কর্মকমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ বিভিন্ন সাংবিধানিক নিয়োগে বিধান।

আলোচনা শুরু হয় এক শোকবার্তা দিয়ে গতকাল উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটে। কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার শোকপ্রস্তাব পাঠ করে আলোচনা শুরু করেন।

একই ব্যক্তি একসাথে দল ও সরকার চালাবেন কি না—এটি শুধু রাজনৈতিক নয়, এটি একটি গঠনগত প্রশ্ন। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন বলছে—ক্ষমতার ভারসাম্য দরকার। আর সেই ভারসাম্য আসতে হবে আলোচনা ও সম্মতির মাধ্যমে।