জুলাই গণ–অভ্যুত্থান: রাষ্ট্র বদলাল, কিন্তু সিস্টেম বদলাল কি?
নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫:২৯
সকালটা শুরু হয়েছিল গুলির শব্দে। কিন্তু দিনটা শেষ হয়েছিল ইতিহাস বদলে দিয়ে। ৫ আগস্ট ২০২৪—বাংলাদেশ দেখেছিল ৩৬ জুলাই। জুলাই গণ–অভ্যুত্থান কোনো হঠাৎ ঘটনা নয়। এটি জন্ম নিয়েছিল দেড় দশকের স্বৈরতন্ত্র, ভোটাধিকার হরণ, গুম–খুন আর ভয়ভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থার ভেতর থেকে।
কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্রদের আন্দোলন যখন গুলিতে রক্তাক্ত হলো, তখন রাজপথে নেমে এল সাধারণ মানুষ। শ্রমিক, নারী, শিক্ষক, সংখ্যালঘু—সবাই এক কণ্ঠে বলল, আর না।
রাষ্ট্রযন্ত্র দিয়ে দমন করেও এই গণজোয়ার থামানো যায়নি। শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনাকে দেশ ছাড়তে হয়। কিন্তু পতনের পর প্রশ্ন বদলে যায়। রাষ্ট্র সংস্কার হবে কীভাবে? বিচার হবে কবে? গণতন্ত্র কি সত্যিই ফিরবে? এক বছর পর দেখা যায়—ঐক্যের জায়গায় এসেছে বিভাজন। আশার জায়গায় এসেছে অনিশ্চয়তা।
তবু জুলাই হারায়নি। জুলাই আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছে—এই রাষ্ট্র কোনো ব্যক্তি বা দলের নয়, এই রাষ্ট্র জনগণের। আর ইতিহাস বলে, যখন মানুষ এক হয়ে দাঁড়ায়— সবচেয়ে শক্ত স্বৈরাচারও খড়কুটোর মতো ভেসে যায়।
কিন্তু জুলাইয়ের সেই ঐক্যের রাজনীতিই এক বছর না যেতেই ভাঙনের চাপে পড়ে। ছাত্র আন্দোলন থেকে জন্ম নেওয়া জাতীয় নাগরিক পার্টি—এনসিপি আদর্শের রাজনীতি করতে এসে দ্রুতই জড়িয়ে পড়ে জোট, সমঝোতা আর ক্ষমতার অঙ্কে।
ভোট ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে দলটির ভেতরে বাড়তে থাকে মতভেদ, নেতৃত্বের ওপর আস্থার সংকট ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন। জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে আসন সমঝোতাকে কেন্দ্র করে এই বিভাজন প্রকাশ্যে আসে। একের পর এক পদত্যাগে স্পষ্ট হয়ে যায়—জুলাইয়ের চেতনা নিয়ে যাত্রা শুরু করা দলটি এখন নিজের অস্তিত্ব নিয়েই লড়ছে।
বিষয়:

পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।