• ** জাতীয় ** আমরা জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হ্রাস করেছি : শেখ হাসিনা ** আবারও তিন দিনের ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি ** চুয়াডাঙ্গায় হিট স্ট্রোকে দুই নারীর মৃত্যু ** ইউআইইউ ক্যাম্পাসে ‘কৃত্রিম বৃষ্টি’ নিয়ে তোলপাড় সারাদেশ ** সিলেটে মসজিদে যাওয়ার পথে বজ্রপাতে ইমামের মৃত্যু ** নরসিংদীতে হিট স্ট্রোকে যুবকের মৃত্যু ** সব ধরনের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন : https://www.newsflash71.com ** সব ধরনের ভিডিও দেখতে ভিজিট করুন : youtube.com/newsflash71 ** লাইক দিন নিউজফ্ল্যাশের ফেসবুক পেইজে : fb/newsflash71bd **


রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ কি আরও কয়েক বছর ধরে চলবে?

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: কার লাভ, কার ক্ষতি?

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ২২ আগষ্ট ২০২৩, ২৩:৪৯

ছবি: সংগৃহীত

ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্ব রাজনীতি-অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। একবছর পরও পশ্চিমা দুনিয়া ও ন্যাটো এক হয়েও রাশিয়াকে টলাতে পারেনি। রাশিয়া বড় ও সম্পদশালী দেশ হিসেবে হয়তো এ ধাক্কা সামলাতে পারছে । কিন্তু পশ্চিমা সাহায্যে দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধে ইউক্রেন কতটা সুবিধা করতে পারবে সে প্রশ্ন সঙ্গত।

নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলার জন্য নতুন কৌশল নিয়েছে কিয়েভ। এ জন্য রাশিয়ায় পুতিনবিরোধী বিভিন্ন গোষ্ঠীকে ব্যবহার করছে ইউক্রেন। গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া।

চলমান যুদ্ধের প্রায় দেড় বছর ধরে কিয়েভসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে হামলা চালিয়েছে পুতিন বাহিনী। আর এতদিন রাশিয়ার স্থাপনায় পাল্টা হামলার বদলে নিজেদের রক্ষায় বেশি মনোযোগী ছিল ইউক্রেন।

তবে হঠাৎ করেই চলমান যুদ্ধে পাল্টে যেতে শুরু করেছে দৃশ্যপট। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভসহ দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে হামলার বিপরীতে এখন আক্রান্ত হতে শুরু করেছে রাশিয়া। রাজধানী মস্কোয় ড্রোন হামলার পাশাপাশি নাটকীয়ভাবে কয়েক দফা হামলার শিকার হয়েছে রাশিয়ার সীমান্ত এলাকা বেলগোরদ।

যুক্তরাষ্ট্র এবং জার্মানি তাদের কাছে থাকা সবচেয়ে অত্যাধুনিক ট্যাংক ইউক্রেনকে দিতে রাজি হয়েছে। যদিও ইউক্রেন সরকার তার চাহিদামতো সব ট্যাংক পাচ্ছে না। রাশিয়া সতর্ক করেছে, অন্য সবকিছুর মতো এসব ট্যাংকও পুড়ে যাবে। আর এতে বরং ইউক্রেনের দুর্ভোগ বাড়বে।

খেলা এখানেই শেষ নয়, যুদ্ধের গতিপ্রকৃতি কোন দিকে যাবে, সেটাই বড় প্রশ্ন। রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার মতো পর্যাপ্ত শক্তি-সামর্থ্য না থাকলেও আমেরিকা ও পশ্চিমাদের প্ররোচনা এবং সাহায্যে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে।

রাশিয়া এখনো বিশ্বের প্রধান সামরিক ও পারমাণবিক ক্ষমতাধর দেশ। সে অর্থে রাশিয়া যুদ্ধ ইউক্রেনের সঙ্গে করছে না, করছে মার্কিন ও পশ্চিমা শক্তির সঙ্গে। এ যুদ্ধে ইউক্রেন তাদের সাহায্য নিয়ে কতটুকু পেরে উঠবে সেটাই প্রশ্ন।

পশ্চিমা ব্লকের বাইরের দেশগুলো শুধু নয়, পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা ছাড়া আর কিছু করতে পারেনি। ইউরোপীয় ইউনিয়ন গত বছর জানায় রাশিয়ার সঙ্গে রাতারাতি অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা সম্ভব নয়।

ইউক্রেনের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার রাশিয়ার  চলমান যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ীতে পরিণত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল বলছে, বর্তমানে লড়াইয়ের গতি যে শুধু ধীরগতির তা নয়, সংঘাতে  জড়িত উভয় পক্ষের কারোরই রাজনৈতিক ও অর্জনযোগ্য লক্ষ্য নেই।

আসলে এই যুদ্ধের কারণ মার্কিনীদের একক সামরিক কর্তৃত্বের অভিলাষ। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেন, ওয়াশিংটন ইউক্রেনকে তার উৎপাদিত আধুনিক ও দূরপাল্লাসহ নানা ধরনের অস্ত্রের পরীক্ষার ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।

সাবেক রুশ প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হতে কয়েক দশক লেগে যেতে পারে। কারণ, এটি মস্কোর জন্য অস্তিত্বের লড়াই।

মেদভেদেভ বর্তমানে রাশিয়ান সিকিউরিটি কাউন্সিলের ডেপুটি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি মনে করেন, ইউক্রেন রাষ্ট্রকে পুরোপুরি ভেঙে দিতে হবে। এই রাষ্ট্র একটি সন্ত্রাসী সত্তা। এই আবর্জনা যেন আবার ফিরে আসতে না পারে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে মেদভেদেভ লিখেছেন, ‘এটি করতে যদি কয়েক বছর কিংবা কয়েক দশকও লেগে যায়, তবে তা–ই হোক। আমাদের আর উপায় নেই। আমরা যদি তাঁদের শত্রুতাপূর্ণ রাজনৈতিক শাসনব্যবস্থাকে ধ্বংস করে না দিই, তাহলে পশ্চিমারা এক হয়ে রাশিয়াকে টুকরা টুকরা করে ফেলবে। আর তা আমাদের সর্বনাশ ডেকে আনবে, যা কারোরই কাম্য নয়।’

তিনি লিখেছেন, তাদের জন্য (পশ্চিমা বিশ্ব) এটি এক অচেনা যুদ্ধ। যাঁরা মারা যাচ্ছেন, তাঁরা তাদের কাছে অচেনা। যাঁরা মারা যাচ্ছেন, তাঁদের প্রতি পশ্চিমাদের কোনো সহানুভূতিই নেই। সুতরাং তারা কখনো নিজেদের স্বার্থের বাইরে গিয়ে কিছু করবে না।

ইউক্রেনকে সতর্ক করে মেদভেদেভ বলেছেন, পশ্চিমা দেশগুলো যেভাবে একজোট হয়ে ইউক্রেনকে সহযোগিতা করছে, তা চিরদিন থাকবে না। নিজেদের স্বার্থে আঘাত লাগলে তারা সরে পড়বে।

সে যাই হোক, এ যুদ্ধের আঞ্চলিক-রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক স্বার্থ-সমীকরণের বোঝাপড়াই বলে দেবে এর ভবিষ্যৎ ও গতিপথ কী হবে? এ বিষয়ে ব্রিটেনের বার্মিংহামি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক স্টেফান ওলফের মন্তব্য, যুদ্ধ ক্ষণস্থায়ী বা প্রলম্বিত যাই হোক না কেন এ বেড়াজাল থেকে ইউক্রেন সহসা মুক্তি পাচ্ছে না।




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top