শুক্রবার, ২ মে ২০২৫, ১৯ বৈশাখ ১৪৩২

ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর হামলায় ৯ শিশুসহ নিহত ১৮

Nasir Uddin | প্রকাশিত: ৫ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৪৩

ফাইল ছবি

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামছে না, বরং সময়ের সঙ্গে তা আরও বড় আকার ধারণ করছে। যুদ্ধ যত দীর্ঘায়িত হচ্ছে, ততই সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। এবার ইউক্রেনের শান্তিপূর্ণ একটি আবাসিক এলাকায় রুশ বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত হয়েছেন ১৮ জন, যাদের মধ্যে নয় জন শিশু রয়েছে।

আল জাজিরা বলছে, স্থানীয় সময় শুক্রবার (৪ এপ্রিল) জেলেনস্কির জন্মস্থান ক্রিভি রিহ শহরে এই হামলা চালায় রাশিয়া। ক্রিভি রি শহরটি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কির হোমটাউন হিসেবে পরিচিত। জেলেনস্কির জন্ম ও বেড়ে ওঠা এ শহরেই।

ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাত বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্যোগের মধ্যেই এ হামলার ঘটনা ঘটলো। এটি ২০২৪ সালের মধ্যে এখন পর্যন্ত রাশিয়ার সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। হামলার সময় লক্ষ্য ছিল আবাসিক এলাকা, যেখানে সাধারণ মানুষ ঘুমিয়ে বা দৈনন্দিন কাজকর্মে ব্যস্ত ছিলেন।

নিপ্রোপেত্রভক্স অঞ্চলের গভর্নর সেরহি লিসাক জানিয়েছেন, আবাসিক ভবনগুলোর একাংশ ধসে পড়ে এবং সেখানে বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ড ঘটে। অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৩০ জনের বেশি হাসপাতালে ভর্তি আছেন। আহতদের একজন মাত্র তিন মাস বয়সী শিশু। এখনও অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে, ফলে উদ্ধার কাজ চলমান রয়েছে।

টেলিগ্রামে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, রাস্তায় পড়ে আছে নিহত ও আহত মানুষের দেহ, আকাশে উড়ছে ধোঁয়ার কুণ্ডলী, আর কাছেই একটি শিশুদের খেলার মাঠ—সব মিলিয়ে যেন যুদ্ধবিধ্বস্ত এক বিভীষিকাময় দৃশ্য। এসব ভিডিওর সত্যতা যাচাই না হলেও পরিস্থিতির ভয়াবহতা সহজেই অনুমেয়।

স্থানীয় মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দাবি, হামলায় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। এই ধরনের অস্ত্র সাধারণত কয়েক মিনিটেই লক্ষ্যে পৌঁছায় এবং অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়া প্রতিহত করা কঠিন। অন্যদিকে, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে—এই হামলার লক্ষ্য ছিল ইউক্রেনীয় সেনা ও বিদেশি প্রশিক্ষকদের সমাবেশ, যেখানে ৮৫ জনের বেশি “বিদেশি সেনা” নিহত এবং ২০টিরও বেশি সামরিক যান ধ্বংস হয়েছে।

এই হামলার পর প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি পশ্চিমাদের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন মস্কোর ওপর আরও কড়া চাপ প্রয়োগের জন্য। এমন এক সময়ে এই হামলা চালানো হলো, যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সংঘাত বন্ধে উদ্যোগ নিচ্ছেন। এই পরিস্থিতি প্রমাণ করে—শান্তির উদ্যোগ যতই নেওয়া হোক না কেন, বাস্তবতা ভিন্ন।



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top