গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও ১২০, প্রাণহানি ছাড়াল ৫৫ হাজার

Nasir Uddin | প্রকাশিত: ১২ জুন ২০২৫, ১১:০৪

ফাইল ছবি

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলের হামলায় আরও ১২০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এছাড়া, সাড়ে তিন শতাধিক ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ক্ষুধার্ত ত্রাণপ্রত্যাশীও রয়েছেন। এতে করে গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতায় মোট নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫৫ হাজার। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, গাজার চিকিৎসা সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি সেনাদের গুলি ও বিমান হামলায় এ প্রাণহানি ঘটে। যুদ্ধের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় নিহতের সংখ্যা পঞ্চান্ন হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বুধবার সকাল থেকে একদিনে ৫৭ জন ত্রাণ প্রত্যাশী হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ৩৬৩ জন। এসব ঘটনা ঘটেছে বিতরণকেন্দ্রগুলোতে, যেগুলোর পরিচালনায় রয়েছে ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ (জিএইচএফ)। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সমর্থনে পরিচালিত এ সংস্থাটি বিতর্কের কেন্দ্রে চলে এসেছে। গাজায় ইসরায়েল-নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতেই এসব কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে এবং বারবার সেগুলোকেই হামলার লক্ষ্যবস্তু বানানো হচ্ছে।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জিএইচএফ পরিচালিত ত্রাণব্যবস্থাকে “নাটকীয় সাফল্য” বললেও বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার সংস্থা ও রাষ্ট্রগুলো এ বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছে, কারণ এসব কেন্দ্রে উপচে পড়া মানুষের ভিড়ে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটছে এবং তা ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনছে।

এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘও। ইসরায়েলি সংস্থা জিএইচএফের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণে অংশ নেবে না তারা। কারণ এতে ইসরায়েলি সামরিক সহায়তাপ্রাপ্ত বেসরকারি ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে, যা মানবিক নীতিমালার লঙ্ঘন।

এদিকে, জিএইচএফ প্রতিদিন একজনকে ১৭৫০ ক্যালরি খাদ্য সরবরাহের লক্ষ্য ঠিক করেছে, যা আন্তর্জাতিক জরুরি মানদণ্ডের চেয়েও অনেক কম।

এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক ক্রিস নিউটন বলেন, ইসরায়েল এমন একটি সহায়তা ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে, যা ইচ্ছাকৃতভাবে বিশৃঙ্খল, সহিংস এবং জনগণকে আরও দক্ষিণ অঞ্চলের দিকে ঠেলে দেওয়ার মাধ্যমে অনাহারে রাখার কৌশল হিসেবে কাজ করছে।

নিউটনের ভাষায়, এই পরিমাণ খাদ্য ১৯৪০-এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রে পরিচালিত এক অনাহার পরীক্ষায় ব্যবহৃত ক্যালরির কাছাকাছি। বরং ২০০৮ সালে ইসরায়েল নিজেই গাজার জন্য যে ন্যূনতম পুষ্টির সীমা নির্ধারণ করেছিল, তার চেয়েও কম।



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top