রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৬ আশ্বিন ১৪৩২

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় একদিনে নিহত ৯১ ফিলিস্তিনি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:৪০

ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় একদিনে আরও অন্তত ৯১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল-শিফার পরিচালক ড. মোহাম্মদ আবু সালমিয়ার পরিবারের সদস্যরা এবং গাজা সিটি থেকে পালানোর সময় প্রাণ হারানো চার যাত্রী। খবর আল জাজিরার।

 

গাজার স্বাস্থ্যকর্মীরা জানিয়েছেন, শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দিনভর ইসরায়েলি সেনাদের আকাশ ও স্থল হামলায় বসতবাড়ি, স্কুলে তৈরি আশ্রয়কেন্দ্র, বাস্তুচ্যুতদের তাঁবু ও পালিয়ে আসা মানুষ বহনকারী ট্রাক লক্ষ্যবস্তু হয়। শুধু এসব হামলাতেই নিহত হয়েছেন অন্তত ৭৬ জন।

 

দিনের শুরুতে বোমা হামলায় ধ্বংস হয় ড. আবু সালমিয়ার পারিবারিক বাড়ি। এতে তার ভাই, ভাবি ও তাদের সন্তানসহ অন্তত পাঁচজন মারা যান।

 

শোকাহত আবু সালমিয়া বলেন, “আমি তখন জরুরি বিভাগে ডিউটি করছিলাম। হঠাৎ আমার ভাই ও তার স্ত্রীর মরদেহ সামনে আসে। এখন আর কিছুই অবিশ্বাস্য নয়—প্রিয়জন হয়তো শহীদ হয়ে যাচ্ছে, নয়তো আহত হয়ে আসছে।”

 

হামাস এ হামলার নিন্দা জানিয়ে একে চিকিৎসকদের গাজা ছাড়তে বাধ্য করার উদ্দেশ্যে চালানো “রক্তাক্ত সন্ত্রাসী বার্তা” বলে অভিহিত করেছে। তাদের দাবি, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনী ১ হাজার ৭০০ জন স্বাস্থ্যকর্মীকে হত্যা করেছে এবং ৪০০ জনকে আটক করেছে।

 

এছাড়া শহরের নাসর এলাকায় এক ট্রাক লক্ষ্য করে ইসরায়েলি ড্রোন হামলা চালায়। এতে অন্তত চারজন নিহত হন। তাদের রক্তাক্ত মরদেহ রাস্তায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে ছিল।

 

আল জাজিরার সাংবাদিক হিন্দ খুদারি জানিয়েছেন, হাজারো মানুষ নিরবচ্ছিন্ন বোমাবর্ষণ, কামান ও কোয়াডকপ্টারের হামলা থেকে পালাচ্ছিল। তার ভাষায়, “ইসরায়েল বিস্ফোরকভর্তি রোবটও ব্যবহার করছে, যা পুরো এলাকা ধ্বংস করে দিচ্ছে। প্রতিবার বিস্ফোরণে মনে হচ্ছে ভূমিকম্প হচ্ছে।”

 

ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, আগস্ট থেকে শুরু হওয়া অভিযানে গাজার প্রায় ৪ লাখ ৫০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এর আগে সেখানে প্রায় ১০ লাখ মানুষের বসবাস ছিল। শুধু গত দুই সপ্তাহেই ইসরায়েলি সেনারা অন্তত ২০টি বহুতল ভবন ধ্বংস করেছে।

 

কিন্তু পালিয়ে আসা মানুষ এখন চরম দুর্দশায় পড়েছেন। খুদারি জানান, “মানুষ রাস্তায় তাঁবু ফেলছে। নেই পানি, নেই বিদ্যুৎ, নেই কোনো অবকাঠামো—তাদের সামনে আর কোনো বিকল্পও নেই।”



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top