দক্ষিণ এশিয়ায় টানা বৃষ্টি–ঝড়ে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধস: চার দেশে নিহত প্রায় ৬০০

ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মালয়েশিয়ায় টানা ভারি বর্ষণ, ঝড় ও সাইক্লোনের প্রভাবে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধস দেখা দিয়েছে। এখন পর্যন্ত এসব দেশে প্রায় ৬০০ মানুষের মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে, নিখোঁজ রয়েছেন আরও শতাধিক। কয়েক বছরের মধ্যে এটিই দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলোর একটি বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপে গত বুধবার (২৬ নভেম্বর) থেকে টানা ভারি বর্ষণে আচেহ ও পশ্চিম সুমাত্রা এলাকায় ব্যাপক ধস ও বন্যা সৃষ্টি হয়েছে। ধসে পড়েছে বহু বাড়িঘর, হাজারো মানুষ এখনো আটকা। ছাদে আশ্রয় নিয়ে উদ্ধার অপেক্ষায় আছেন অনেকে। দেশটিতে ইতোমধ্যে ৩০০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন, নিখোঁজ রয়েছেন আরও অনেকে।

শ্রীলঙ্কায় সাইক্লোন দিতওয়া আঘাত হানার পর ব্যাপক বন্যা ও ভূমিধস হয়েছে। দেশটিতে ১৩০ জনের বেশি প্রাণহানি ঘটেছে এবং প্রায় ১৭০ জন নিখোঁজ। পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে সরকার। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৫ হাজারের বেশি ঘরবাড়ি, লাখো মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন।

থাইল্যান্ডে দক্ষিণাঞ্চলের বেশির ভাগ এলাকা পানিতে প্লাবিত। বিভিন্ন স্থানে বন্যার পানি ৩ মিটার পর্যন্ত উঠে গেছে। এতে ১৬০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় ৩৮ লাখ মানুষ। হাট ইয়াই শহরে ৩৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে—যা গত ৩০০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। মরদেহ রাখার জায়গার সংকট দেখা দেওয়ায় রেফ্রিজারেটেড ট্রাক ব্যবহার করতে হচ্ছে।

মালয়েশিয়ায় প্রাণহানি তুলনামূলক কম হলেও ক্ষয়ক্ষতি ব্যাপক। বিশেষ করে উত্তরের পেরলিস প্রদেশে বহু এলাকা পানির নিচে, হাজারো মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন।

আবহাওয়া ও ভূপ্রাকৃতিক পরিস্থিতি উদ্ধারকাজকে অনেক জায়গায় ব্যাহত করছে। আবহাওয়াবিদদের মতে, টাইফুন কোতো, বিরল সাইক্লোন সেনইয়া এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বৃষ্টিপাত আরও তীব্র ও দীর্ঘস্থায়ী হয়ে উঠেছে, যা এই দুর্যোগকে মারাত্মক রূপ দিয়েছে।