শেখ হাসিনা দেশে ফিরতে চান, তবে দিয়েছেন শর্ত

গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দেশে ফিরতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তবে তিনি স্পষ্ট শর্ত দিয়েছেন—শুধু ‘বৈধ’ সরকারের অধীনে থাকলেই তিনি দেশে ফিরবেন।

বুধবার (২৯ অক্টোবর) প্রকাশিত রয়টার্সের সঙ্গে এক ই-মেইল সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, “আমি দেশে ফিরতে চাই, তবে তখনই ফিরব যখন বাংলাদেশে বৈধ সরকার থাকবে এবং প্রকৃত আইন-শৃঙ্খলা বজায় থাকবে।”
একই সঙ্গে তিনি জানান, আপাতত ভারতে থাকারই পরিকল্পনা তার।

রয়টার্স জানায়, আওয়ামী লীগ সরকার আমলে সহিংস দমন-পীড়ন, গুমসহ বিভিন্ন মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা চলছে। ট্রাইব্যুনাল ইতোমধ্যে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেখ হাসিনার যেকোনো ‘বিদ্বেষমূলক বক্তব্য’ প্রচার নিষিদ্ধ করেছে।

সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা আরও জানান, আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে কোনো নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সরকারের অধীনে তিনি দেশে ফিরবেন না।
তিনি ইঙ্গিত দেন, ভবিষ্যতে তার বা তার পরিবারের কেউ হয়তো আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে থাকবেন না।

অন্যদিকে, লন্ডনের ইন্ডিপেন্ডেন্ট-কে দেওয়া আরেক সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি গত বছরের গণ-অভ্যুত্থানের সময় নিহতদের বিষয়ে ক্ষমা চাইবেন না।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে সংঘটিত গণ-অভ্যুত্থানের সময় দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। ওই সময়ের ‘জুলাই গণহত্যা’ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দিতে ভারতের কাছে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠিয়েছে। তবে ভারত এখনো সে বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

এর মধ্যে আদালত শেখ হাসিনাকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়ে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানিয়েছে।

সূত্র: রয়টার্স, দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট