পাচার অর্থ ফেরাতে লাগবে তিন থেকে পাঁচ বছর: গভর্নর

Nasir Uddin | প্রকাশিত: ২৭ মে ২০২৫, ১৯:৪৪

ফাইল ছবি

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ১৮ থেকে ২০ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে। এসব অর্থ ফেরত আনতে ৩ থেকে ৫ বছর সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। মঙ্গলবার (২৭ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গভর্নর এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) তথ্য বলছে, ২০২৩-২৪ অর্থ-বছরে ১৭ হাজার ৩শ’ ৪৫টি সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। যা আগের অর্থ-বছরের তুলনায় ২৩ শতাংশ বেশি।

বিএফআইইউ ২০২৩-২৪ অর্থ-বছরে ১১৪টি আর্থিক গোয়েন্দা প্রতিবেদন বিভিন্ন তদন্তকারী সংস্থায় পাঠায়। এছাড়া, বিএফআইইউ বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও সরকারি অন্যান্য সংস্থার সাথে ১,২২০টি তথ্য বিনিময় করেছে যা পূর্ববর্তী অর্থ-বছরের তুলনায় ১৩.৯১% বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, তার ধারণা ১৮ থেকে ২০ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে। কিন্তু সেই টাকা ফেরত আনা কঠিন। তবে, বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশিদের সম্পদ জব্দ শুরু হয়েছে। আর টাকা ফেরত আনতে ৫ বছর পর্যন্ত লেগে যেতে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আরও বলেন, পাচার করা অর্থ ফেরত আনার অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের ছিল না। এখন আন্তঃমন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ আছে। প্রয়োজনীয় বিধি-বিধান সংশোধন করবে সরকার। ক্ষমতা বাড়ানো হবে টাস্কফোর্সের।

তিনি বলেন, অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের সময়ে আমাদের প্রধান কাজ হলো, সর্বোচ্চ পরিমাণ সম্পদ জব্দ করা। যারা পাচার করেছে তাদের জেলে পোরা কঠিন কাজ, এমন কোথাও হয়নি। আমাদের লক্ষ্য হলো, ব্যাংক থেকে টাকা চলে গেলে সেই টাকা উদ্ধার করা। এখানে বিভিন্ন আইনের জটিলতা আছে। আমি যদি ক্রিমিনাল আইনে মামলা করি, তাহলে সিভিল মামলা করতে পারব না। এখন ভাবতে হবে আমি কোন মামলা করব।

আহসান এইচ মনসুর বলেন, এক্ষেত্রে বিদেশের আইনে কোনো ব্যত্যয় তারা মানবে না। আমরা কীভাবে মামলা করছি, যদি বিদেশে প্রশ্ন তোলে তাহলে আমাদের সব আটকে যাবে। কাজেই আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে এভিডেন্স প্রস্তুত রাখতে হবে।

তিনি আরও বলেন, পাচার হওয়া টাকা বিদেশে থেকে উদ্ধারে বিদেশিদের কাছ থেকে সহযোগিতা পাচ্ছি। কিন্তু দেশের কাজটি যদি এগিয়ে নিতে পারতাম, তাহলে কাজটি দ্রুত হতো।

কোনো প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়নি উল্লেখ করে গভর্নর বলেন, কোনো ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হলে প্রতিষ্ঠানটি সমস্যায় পড়বে, এটা আমরা চাই না।

বিভিন্ন ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক করে না। কোর্টের অর্ডারে জব্দ করা হয় বা কোনো এজেন্সির নির্দেশে করা হয়, জানান বিএফআইইউ-এর পরিচালক আনিসুর রহমান।



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top