মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২

ঢাকায় অবৈধ সিসার কারবার অনলাইনে সক্রিয়, ডিএনসির ফাঁদে দুইজন গ্রেপ্তার

স্টাফ রিপোর্টার, ঢাকা | প্রকাশিত: ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ১০:০২

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীতে অবৈধ সিসা বারের বিরুদ্ধে অভিযান চললেও থেমে নেই সিসার ব্যবসা। বন্ধ বারের পর অনলাইনে নতুন করে সক্রিয় হয়েছে সিসার কারবারিরা। ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপে গোপন গ্রুপ ব্যবহার করে সহজেই চলছে সিসা বিক্রি। অর্ডার করলেই ঠিকানা অনুযায়ী পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে পণ্য। এমনকি ভিডিও পাঠিয়ে দেখানো হচ্ছে স্যাম্পল ও ব্যবহারের নিয়মও।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় একটি চক্রের সন্ধান পেয়ে ফাঁদ পাতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকা বিভাগীয় গোয়েন্দা শাখার বিশেষ ইউনিট অনলাইনে অর্ডার দিয়ে প্রথমে সিসা কেনে এবং সেই সূত্র ধরে অভিযান পরিচালনা করে।

গত ১৬ নভেম্বর রাতে হাতিরঝিলে অভিযান চালিয়ে চক্রের ডেলিভারিম্যান মো. আশিকুর রহমান সামি (১৯) এবং মূল হোতা আব্দুল আলিম ওয়াসিফ (২৮)–কে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় উদ্ধার করা হয় ১৮ কেজি সিসা, একাধিক হুক্কা সেট, চারকোল, সিসিটিভি ক্যামেরা ও মোবাইল ফোন।

মঙ্গলবার দুপুরে সেগুনবাগিচায় ডিএনসি সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মহাপরিচালক মো. হাসান মারুফ বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে সিসা সরবরাহকারী চক্রকে দীর্ঘদিন ধরে নজরদারিতে রাখা হয়েছিল। অবশেষে তাদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার সম্ভব হয়েছে।”

  • অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ বদরুদ্দীনের তত্ত্বাবধানে এবং উপপরিচালক মেহেদী হাসানের নেতৃত্বে ডিএনসির দল অভিযান পরিচালনা করে।

  • ছদ্মবেশে ক্রেতা সেজে সামির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।

  • ১৬ নভেম্বর রাত ১১টায় হাতিরঝিলে ডেলিভারির সময় সামিকে আটক করা হয়। তার স্কুলব্যাগে ছিল ২ কেজি ‘আল ফখর’ সিসা।

  • সামির তথ্য অনুযায়ী উত্তর বাড্ডার বিটিআই প্রিমিয়াম প্লাজায় ‘ইনোভেট’ দোকানে অভিযান চালিয়ে দোকান মালিক ওয়াসিফকে গ্রেপ্তার করা হয়।

  • তার স্টোর রুম থেকে উদ্ধার করা হয় ১৬ কেজি সিসা, ৩টি হুক্কা সেট, ১০ প্যাকেট চারকোল, ১৩টি আইফোন এবং ৫টি ওয়াইফাই সিসিটিভি ক্যামেরা।

জিজ্ঞাসাবাদে ওয়াসিফ জানায়, দীর্ঘদিন ধরে আইটি পণ্যের ব্যবসার আড়ালে অনলাইনে সিসা সরবরাহ করত তিনি। সামি ছিল তার ডেলিভারিম্যান।

উপপরিচালক মেহেদী হাসান জানান, অফলাইনে সিসা নিষিদ্ধ হওয়ার পর চক্রটি অনলাইনে বিশেষ ফেসবুক গ্রুপে গোপন বিজ্ঞাপন দিত। সাধারণ ব্যবহারকারীরা এসব বিজ্ঞাপন দেখতে পারত না। ডিএনসির সদস্যরা ছদ্মবেশে এসব গ্রুপে ঢুকে তথ্য সংগ্রহ করে। কোড ব্যবহার করে বিভিন্ন ফ্লেভারের সিসা বিক্রি করা হতো এবং ভিডিও স্যাম্পল পাঠিয়ে নিশ্চিত হওয়ার পর অর্ডার নেওয়া হতো।

ডিএনসি জানিয়েছে, চক্রটির আরও সদস্যদের শনাক্তে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। শিগগির আরও গ্রেপ্তার হতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top