মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২

ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়া ৩৬ বাংলাদেশির তালিকায় আছেন যারা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৪৯

সংগৃহীত

ভারতের বহুল আলোচিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ)-এর আওতায় প্রথম ধাপে মোট ৩৬ জন বাংলাদেশি ভারতীয় নাগরিকত্ব পেয়েছেন। এর মধ্যে ওড়িশা রাজ্যে ৩৫ জন এবং আসাম রাজ্যে একজন বাংলাদেশি নাগরিকত্ব লাভ করেছেন। ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে যারা ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন, তাদের জন্য এটি এক বড় স্বস্তির খবর।

ওড়িশা রাজ্য সরকারের উদ্যোগে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে নতুন নাগরিকদের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে নাগরিকত্বের সনদ তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝি বলেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নির্যাতিত সংখ্যালঘুদের জন্য নিরাপত্তা, মর্যাদা ও আশ্রয়ের প্রতীক।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে প্রণীত সিএএ অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসা ৩৫ জন অভিবাসীকে নাগরিকত্বের সনদ দেওয়া হয়। এর ফলে ওড়িশায় সিএএ-এর আওতায় নাগরিকত্বপ্রাপ্ত মানুষের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৫১ জনে। বর্তমানে রাজ্যটিতে আরও প্রায় ১ হাজার ১০০টি আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের পর্যায়ে রয়েছে।

ওড়িশার জনশুমারি দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সদ্য নাগরিকত্বপ্রাপ্ত ৩৫ জনই হিন্দু ধর্মাবলম্বী। নাগরিকত্বপ্রাপ্তদের একজন পরিতোষ সরকার জানান, ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর বাংলাদেশে প্রতিশোধমূলক সহিংসতায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, জোরপূর্বক ধর্মান্তর ও যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। সে সময় তার পরিবার বাংলাদেশ ছেড়ে ওড়িশার নবরংপুর জেলার উমরকোটে আশ্রয় নেয়। বহু দশক অপেক্ষার পর অবশেষে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতীয় নাগরিকত্ব লাভ করলেন।

এদিকে, আসামে প্রথমবারের মতো সিএএ-এর আওতায় একজন বাংলাদেশি নারী ভারতীয় নাগরিকত্ব অর্জন করেছেন। শ্রীভূমি জেলার বাসিন্দা ৪০ বছর বয়সী ওই নারী ২০০৭ সালে বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসেন। শিলচরের সাবেক ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের সদস্য ও আইনজীবী ধর্মানন্দ দেব জানান, চিকিৎসার প্রয়োজনে শিলচরে আসার সময় স্থানীয় এক যুবকের সঙ্গে তার পরিচয় হয় এবং পরে তাদের বিয়ে হয়। তাদের একটি সন্তানও রয়েছে।

ধর্মানন্দ দেব আরও জানান, নাগরিকত্ব আইন, ১৯৫৫-এর ৫(১)(সি) ও ৬বি ধারার অধীনে নিবন্ধন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ওই নারীকে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে। আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি যদি ভারতীয় নাগরিককে বিয়ে করেন এবং টানা সাত বছর ভারতে বসবাস করেন, তবে তিনি নিবন্ধনের মাধ্যমে ভারতীয় নাগরিকত্ব পেতে পারেন।

প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ১১ মার্চ থেকে কার্যকর হওয়া বিধি অনুযায়ী বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে ভারতে প্রবেশ করা অমুসলিমরা ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। সেই বিধান অনুসারেই ওড়িশায় নতুন করে এই ৩৫ জন বাংলাদেশি নাগরিকত্ব লাভ করেছেন।

 

এনএফ৭১/ওতু



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top