সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে উত্তাল সচিবালয়

Nasir Uddin | প্রকাশিত: ২৬ মে ২০২৫, ১৬:১৪

ছবি: সংগৃহীত

‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভে নেমেছেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীরা। সোমবার (২৬ মে) সচিবালয়ের ভেতরে বাদামতলা থেকে এ কর্মসূচি শুরু করেন তারা। তাদের স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠেছে প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়।

এর আগে বেলা ১১টার দিকে সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। বিক্ষোভ নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশ সচিবালয় সংযুক্ত কর্মকর্তা কর্মচারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মো. বাদিউল কবির ও কো-চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম।

মিছিল থেকে ‘অবৈধ কালো আইন মানব না, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিক্ষোভে অংশ নিতে দপ্তর থেকে নেমে এসেছেন। বিক্ষোভকারীদের স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠেছে সচিবালয় এলাকা। অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা ক্রমেই বাড়তে থাকে।

এদিকে দাবি পূরণ না হলে আজ সোমবার সচিবালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদ। বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের ব্যানারে দু’দিন ধরে এই আন্দোলন চলছে।

গত বৃহস্পতিবার সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। কর্মচারীরা এই অনুমোদিত খসড়াকে ‘নিবর্তনমূলক ও কালাকানুন’ আখ্যায়িত করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন তারা।

এদিকে আন্দোলনের মধ্যে রোববার (২৫ মে) সন্ধ্যায় সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর গেজেটের বিজ্ঞপ্তি জারি করে সরকার। এতে বলা হয়েছে, ‘ইহা অবিলম্বে কার্যকর হবে। সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ধারা ৩৭ এরপর নিম্নরূপ নূতন ধারা ৩৭ক সন্নিবেশিত হবে।’ এ ছাড়া সরকারি কর্মচারীদের আচরণ ও দণ্ড সংক্রান্ত বিশেষ বিধান যুক্ত করা হয়েছে।

এই বিশেষ বিধানে চার ধরনের অপরাধ ও তিন ধরনের শাস্তির কথা বলা আছে। অপরাধগুলো হলো– সরকারি কর্মচারী এমন কোনো কাজ করতে পারবেন না, যাতে অন্য কর্মচারীর মধ্যে অনানুগত্য তৈরি হয় বা শৃঙ্খলা ব্যাহত হয় বা কাজে বাধার সৃষ্টি হয়; অন্যদের সঙ্গে সংঘবদ্ধভাবে বা আলাদাভাবে ছুটি ব্যতীত বা কোনো যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া কাজে অনুপস্থিত থাকেন বা কর্তব্য কাজে ব্যর্থ হন; অন্য কর্মচারীকে কাজে অনুপস্থিত থাকতে, বিরত থাকতে বা কর্তব্য পালন না করতে উসকানি দেওয়া এবং যে কোনো কর্মচারীকে কাজে অনুপস্থিত থাকতে বা কাজ না করতে প্ররোচিত করা।

বিশেষ এই বিধানে এসব অপরাধের তিন ধরনের শাস্তি দেওয়া যাবে– বরখাস্ত, অব্যাহতি এবং পদাবনতি বা বেতন কমানো।

এদিকে আন্দোলনের মধ্যে সরকারি কর্মচারীদের দাবি-দাওয়া পর্যালোচনা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সুপারিশ দেওয়ার জন্য এ-সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটি পুনর্গঠন করা হয়েছে। গতকাল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এই কমিটি পুনর্গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top