ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্বঐতিহ্য ষাটগম্বুজ মসজিদ মারাত্মক ক্ষতির মুখে

ধর্ম ডেস্ক | প্রকাশিত: ১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৪২

সংগৃহীত

ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্বঐতিহ্য ও পঞ্চদশ শতকের সুলতানি স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন, ষাটগম্বুজ মসজিদ ভয়াবহ অস্তিত্ব সংকটে রয়েছে। লবণাক্ততা, আর্দ্রতা এবং বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে মসজিদের ১০টি মিহরাব দ্রুত ক্ষয়ে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, জরুরি সংরক্ষণ ব্যবস্থা না নিলে মিহরাবসহ পুরো স্থাপনাটি ধসে যেতে পারে।

চুনসুরকি, পোড়ামাটির ইট ও বেলে পাথরের সমন্বয়ে নির্মিত মসজিদের নিচের অংশে নোনা পানি জমে লবণের স্ফটিক তৈরি হচ্ছে, যা ইট-পাথরের বন্ধন দুর্বল করছে। দেয়ালে সাদা লবণের স্তর, ফাটল ও খসে পড়া অংশ দেখা যাচ্ছে, মিহরাবের অলংকরণও বিবর্ণ হয়ে গেছে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটি ও আইকমসের যৌথ গবেষণায় দেখা গেছে—বাড়তি আর্দ্রতা, তাপমাত্রার পরিবর্তন, শিল্পায়নের বায়ুদূষণ এবং লবণাক্ততার কারণে ক্ষয় গত কয়েক বছরে বহুগুণ বেড়েছে। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর পাঁচ সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে সরেজমিন পরিদর্শনের পর সুপারিশ জমা দিয়েছে।

ড. মো. শফিকুল আলম জানিয়েছেন, সিডর ও আইলার জলোচ্ছ্বাসের কারণে মিহরাব ও স্তম্ভগুলোতে বড় ধরনের ক্ষতি সৃষ্টি হয়েছে। বেলে পাথর নরম ও ছিদ্রযুক্ত হওয়ায় দ্রুত ভেঙে যাচ্ছে, আর লোহার ক্ল্যাম্পে জং ধরেছে। তিনি সতর্ক করেছেন, মিহরাব ধসে গেলে ইউনেস্কো মসজিদটিকে ‘বিপজ্জনক বিশ্ব ঐতিহ্য’ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারে।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক লাভলী ইয়াসমিন বলেন, ক্ষয়চিত্র তৈরির পর আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি সংরক্ষণ পরিকল্পনা নেওয়া হবে। দেশে পাথর সংরক্ষণে দক্ষ জনবল না থাকায় আন্তর্জাতিক সহায়তা জরুরি।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সময়োচিত ব্যবস্থা না নিলে দক্ষিণ এশিয়ার প্রাচীনতম এই স্থাপত্য ঐতিহ্য মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বে, যা বাঙালির গৌরবময় ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক পরিচয়ের জন্য বড় ধাক্কা হবে।

 

এনএফ৭১/ওতু



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top