• ** জাতীয় ** আমরা জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হ্রাস করেছি : শেখ হাসিনা ** আবারও তিন দিনের ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি ** চুয়াডাঙ্গায় হিট স্ট্রোকে দুই নারীর মৃত্যু ** ইউআইইউ ক্যাম্পাসে ‘কৃত্রিম বৃষ্টি’ নিয়ে তোলপাড় সারাদেশ ** সিলেটে মসজিদে যাওয়ার পথে বজ্রপাতে ইমামের মৃত্যু ** নরসিংদীতে হিট স্ট্রোকে যুবকের মৃত্যু ** সব ধরনের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন : https://www.newsflash71.com ** সব ধরনের ভিডিও দেখতে ভিজিট করুন : youtube.com/newsflash71 ** লাইক দিন নিউজফ্ল্যাশের ফেসবুক পেইজে : fb/newsflash71bd **


রেণু পোনা সংকটে ঝুঁকির মুখে ফকিরহাটের চিংড়ি শিল্প

বাগেরহাট থেকে | প্রকাশিত: ৭ মে ২০২১, ২০:৫৬

রেণু পোনা সংকটে ঝুঁকির মুখে ফকিরহাটের চিংড়ি শিল্প

বাগেরহাট জেলার ফকিরহাটের চিংড়ি শিল্প স্মরণকালের সবচেয়ে খারাপ সময় অতিক্রম করছে। অনাবৃষ্টিতে পানির লবনক্ততা বৃদ্ধি, অক্সিজেন কমে যাওয়া, মাছের রেণু ও পোনা সংকটসহ নানাবিধ সমস্যায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে মাছ চাষিরা।

উপজেলা মৎস্য অফিসের তথ্য মতে, এ উপজেলায় ছোট বড় মিলিয়ে ৮ হাজার ১০৩টি চিংড়ি ঘের রয়েছে। চিংড়ির চাষ হয় ৩ হাজার ৬৮৮ হেক্টর জমিতে। ২০২০-২১ অর্থবছরে মাছ উৎপাদন হয়েছে ৫ হাজার ৯৬১ মেট্রিক টন। তবে বেসরকারি হিসেবে এর পরিমাণ আরও বেশি। মাছ উৎপাদন হলেও করোনা কালে বিদেশে মাছ রপ্তানি বন্ধ ও লকডাউনে যোগাযোগ বন্ধ থাকায় মাছের দাম পায়নি চাষিরা।

এদিকে চিংড়ির রেণু ও পোনা সংকটে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন এ অঞ্চলের চাষিরা। লকডাউনে অতিরিক্ত টাকা দিয়েও তারা চাহিদা মোতাবেক পোনা পাচ্ছেন না। ফলে এক ধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন চাষিরা। তারা বলছেন, এ অবস্থা চলতে থাকলে চিংড়ি উৎপাদনে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। ইচ্ছে থাকলেও পোনা ছাড়তে পারছেন না তারা। মাছের ঘের প্রস্তুত করে বসে আছে কিন্তু রেণু পোনা নেই।

করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে লকডাউনের ফলে জেলার বাইরে থেকে সহজে পোনা আসতে পারছে না। আবার নদী থেকে আহরিত পোনা চাষিদের হাতে পৌঁছানোর আগে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে আবারও নদীতে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন হাটে ঘুরেও পোনার ব্যবস্থা করতে পারছেন না চাষিরা। বাগেরহাট জেলার সব থেকে বড় গলদা চিংড়ি পোনার হাট ফকিরহাটের ফলতিতা। ফলতিতা বাজারে প্রায় ৫০টির মত চিংড়ি পোনার আড়ত রয়েছে। যেখানে প্রতিবছর প্রায় ৫০ থেকে ৬০ কোটি পোনা বিক্রি হয়। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১২৫ কোটি টাকা।

ফলতিতা হাটে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন এলাকা থেকে চাষিরা আসছেন পোনা কিনতে। কিন্তু বিক্রির জন্য পোনা এসেছে চাহিদার তুলনায় খুবই কম। প্রতিদিন ভোর থেকে বাগেরহাট জেলার বিভিন্ন এলাকার চিংড়ি চাষিরা এই হাটে গলদা চিংড়ির রেণু ও বাগদা চিংড়ির পোনা কিনতে আসেন। কক্সবাজার, নোয়াখালী, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, কুয়াকাটাসহ বিভিন্ন স্থানের হ্যাচারি ও নদীর পোনা বিক্রি হয় এই হাটে। লকডাউনের কারণে পোনাবাহী পরিবহনগুলো জেলার বাইরের পুলিশ ও প্রশাসনের বাধার সম্মুখীন হওয়ায় সময় মত আসতে পারছে না। সব ধরনের বাঁধা উপেক্ষা করে যা আসছে তারও দাম অনেক বেশি

পোনা কিনতে আসা পিলজঙ্গ এলাকার চাষি শওকাত আলী শেখ বলেন, ‘পানির সংকটে মোটর দিয়ে অনেক দূর থেকে পাইপের সাহায্যে ঘেরে পানি দিয়েছি। এখন পোনা কিনতে আসছিলাম। কিন্তু যে পোনা গেল বছর এক হাজার থেকে ১৫শ টাকায় বিক্রি হয়েছে তা এবার ২ হাজার ৭শ টাকা চাচ্ছেন। গত বছরের মাছে দাম পাইনি আবার পোনা বেশি দামে কিনে যদি না বাঁচে তাইলে পথে বসতে হবে।’

বেতাগা এলাকার মাছ চাষি পরিমল বিশ্বাস বলেন, ‘বৃষ্টি না হওয়ায় ঘেরের অল্প পানি গরম হয়ে রয়েছে। রোদে পানি শুকিয়ে লবনক্ততাও বেড়ে গিয়েছে। একবার পোনা ছেড়েছিলাম কিন্তু অক্সিজেন কমে মাছ মরে গিয়েছে। এত দামে মাছ কিনে আবার ছাড়তে পারছি না। আমার মতো অনেক চাষি রয়েছে যারা পোনা সংকটে বিপদে আছি।’

ফকিরহাট উপজেলা মৎস কর্মকর্তা মো. ফেরদৌস আনসারী বলেন, ‘বিরূপ আবহাওয়ার কারণের এবার কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে আমরা ইতোমধ্যে উপজেলার ৪ হাজার ৩২ জন চাষিকে ১২ থেকে ১৮ হাজার টাকা পর্যন্ত প্রণোদনার অর্থ প্রদান করেছি। লকডাউন উঠে গেলে এবং টানা কয়েকদিন বৃষ্টি হলে অবস্থার উন্নতি হবে আশা করি।’

এনএফ৭১/এনজেএ/২০২১



বিষয়: বাগেরহাট


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top