দেশীয় গ্যাস উত্তোলন বাড়িয়ে জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় উদ্যোগ সরকার ও পেট্রোবাংলার

নিউজফ্ল্যাশ ডেস্ক | প্রকাশিত: ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৩:২৭

ছবি: সংগৃহীত

চলমান জ্বালানি সংকট কাটাতে আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে দেশীয় গ্যাস উৎপাদন বাড়ানোর দিকে জোর দিচ্ছে সরকার। নতুন অনুসন্ধান ব্লক চিহ্নিত করা, পুরনো গ্যাসক্ষেত্র পুনর্মূল্যায়ন এবং উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দেশীয় উৎস থেকে উৎপাদন বাড়লে শিল্প, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও সার কারখানায় জ্বালানি সরবরাহ স্থিতিশীল হবে। এতে ঘন ঘন গ্যাস সংকটের ঝুঁকি কমবে এবং ব্যয়বহুল এলএনজি আমদানির ওপর নির্ভরতা কমে আসবে।

ড. ইজাজ হোসেন, বুয়েটের অধ্যাপক ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ, বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে আমরা দেশীয় উৎস থেকে গ্যাস উত্তোলনের কথা বলছি। কিন্তু বিগত সরকার আমাদের কথায় কান দেয়নি। অন্তর্বর্তী সরকার দেরিতে হলেও বিষয়টির দিকে নজর দিয়েছে। আমদানি নির্ভরতা দেশের জ্বালানি খাতকে দুর্বল করে।”

পেট্রোবাংলা সূত্র জানায়, উপকূলীয় অঞ্চলসহ বিভিন্ন ব্লকে নতুন অনুসন্ধান কাজ জোরদার করা হয়েছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৫০টি কূপ এবং ২০২৬-২৮ সালের মধ্যে আরও ১০০টি কূপ খনন ও ওয়ার্কওভার কার্যক্রম বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে।

জ্বালানি বিভাগ বলছে, ইতোমধ্যেই উৎপাদনে থাকা খনিগুলো সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে। খনিগুলোর আশপাশের একই ধরনের গ্যাস অনুসন্ধান জোরদার করা হলে দৈনিক অন্তত ৬০০ থেকে ১০০০ মিলিয়ন ঘনফুট নতুন দেশীয় গ্যাস সরবরাহ বাড়বে।

  • বাপেক্স জানিয়েছে, জামালপুর-১ অনুসন্ধান কূপে বাণিজ্যিক গ্যাস পাওয়া গেছে। এটি ব্লক-৮ এ দেশের প্রথম গ্যাস আবিষ্কার।

  • সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেড (এসজিএফএল) জানিয়েছে, সিলেট–১০ কূপ খননের সময় তেলের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। সিলেট–১২ কূপ খননের কাজ শুরু হয়েছে।

  • ভোলা গ্যাসক্ষেত্র: ১৯টি নতুন কূপ খননের পরিকল্পনা বাস্তবায়নাধীন।

  • বিজিএফসিএল তিতাস ও বাখরাবাদে দুটি, বাপেক্স শ্রীকাইল ও মোবারকপুরে দুটি গভীর কূপ খননের কাজ করছে।

পেট্রোবাংলার উপ-মহাব্যবস্থাপক তারিকুল ইসলাম খান বলেন, “দেশীয় গ্যাস সরবরাহ বাড়লে জ্বালানি সংকট নিরসনে তা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। চলতি অর্থবছরে ৫০টি এবং ২০২৮ সালের মধ্যে ১০০টি কূপ খনন ও ওয়ার্কওভার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। ভোলার ১১টি কূপের খনন শেষ হলে দৈনিক প্রায় ১৪৩ মিলিয়ন ঘনফুট নতুন গ্যাস উৎপাদন সম্ভব।”

  • ড. ইজাজ হোসেন: “দেশীয় উৎস থেকে গ্যাস উত্তোলন বাড়ালে দেশের জ্বালানি সংকট সমাধান সম্ভব।”

  • ড. বদরুল ইমাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: “ভুলনীতির কারণে আজ বড় খেসারত দিতে হচ্ছে। উচ্চমূল্যের এলএনজি আমদানির ফলে ফরেন রিজার্ভে চাপ পড়ছে। ১০ বছর ধরে গ্যাস অনুসন্ধান না করে আমদানির পথে হেঁটেছে, ফলে জ্বালানি খাত এক দশক পিছিয়ে গেছে।”



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top