রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪ পৌষ ১৪৩২

শীতে বাড়ছে অ্যালার্জির সমস্যা, কারণ ও প্রতিরোধে যা জানা দরকার

লাইফস্টাইল ডেস্ক | প্রকাশিত: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮:৩৬

সংগৃহীত

শীত এলেই অনেকের নাক বন্ধ, হাঁচি, চোখ চুলকানো বা শুকনো কাশির সমস্যা বেড়ে যায়। চিকিৎসকদের মতে, এটি অনেক ক্ষেত্রেই শীতকালীন অ্যালার্জির লক্ষণ। শীতের ঠান্ডা ও রুক্ষ আবহাওয়ার কারণে মানুষ বেশি সময় ঘরের ভেতরে অবস্থান করে, ফলে ঘরের ভেতরের বিভিন্ন অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী উপাদানের সংস্পর্শে আসার ঝুঁকিও বাড়ে।

বিশেষজ্ঞরা জানান, শীতকালে বাতাসে ভাসমান ধুলিকণা, ডাস্ট মাইট, পোষা প্রাণীর লোম ও ত্বকের খোসা, ছত্রাক বা ফাঙ্গাস (মোল্ড) এবং তেলাপোকার মল— এসবই ঘরের ভেতরের সাধারণ অ্যালার্জির কারণ হিসেবে কাজ করে।

শীতকালীন অ্যালার্জির সাধারণ লক্ষণ

শীতকালীন অ্যালার্জির লক্ষণ অনেকটাই মৌসুমি অ্যালার্জির মতো। এর মধ্যে রয়েছে—
হাঁচি, নাক বন্ধ বা নাক দিয়ে পানি পড়া, চোখ চুলকানো ও পানি পড়া, গলা ও কান চুলকানো, শুকনো কাশি (কখনো কফসহ), ত্বকে র‍্যাশ, শরীর খারাপ লাগা এবং কখনো হালকা জ্বর।

তবে যাদের হাঁপানি রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে অ্যালার্জি তীব্র হলে বুক চেপে ধরা, শ্বাস নিতে কষ্ট, শ্বাসের সময় শোঁ শোঁ শব্দ, অতিরিক্ত ক্লান্তি ও অস্থিরতা দেখা দিতে পারে।

অ্যালার্জি নাকি সর্দি— বুঝবেন যেভাবে

চিকিৎসকদের মতে, সর্দি হয় ভাইরাস সংক্রমণের কারণে এবং এটি একজন থেকে আরেকজনের মধ্যে ছড়াতে পারে। অন্যদিকে অ্যালার্জি সংক্রামক নয়; এটি শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রতিক্রিয়া।

সাধারণত সর্দি কয়েক দিন থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে সেরে যায়। কিন্তু অ্যালার্জি যতদিন অ্যালার্জির উপাদানের সংস্পর্শে থাকা হয়, ততদিন চলতে পারে— এমনকি মাসের পর মাসও।

চিকিৎসা ও উপশমের উপায়

শীতকালীন অ্যালার্জির বেশিরভাগ উপসর্গ ঘরেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সিটিরিজিন বা ফেক্সোফেনাডিনের মতো অ্যান্টিহিস্টামিন ওষুধ উপকারী হতে পারে। নাক পরিষ্কার রাখতে নেটি পট দিয়ে নাক ধোয়া এবং নাকের প্রদাহ কমাতে নাসাল স্প্রে ব্যবহার করা যেতে পারে। দীর্ঘদিনের তীব্র অ্যালার্জির ক্ষেত্রে চিকিৎসক ইমিউনোথেরাপি বা অ্যালার্জি শট দেওয়ার পরামর্শ দিতে পারেন।

প্রতিরোধে করণীয়

বিশেষজ্ঞরা শীতকালে ঘরের অ্যালার্জি কমাতে কিছু সতর্কতার কথা বলেছেন। যেমন— বালিশ ও ম্যাট্রেসে ডাস্ট-প্রুফ কভার ব্যবহার, গরম পানিতে নিয়মিত চাদর ধোয়া, ঘরের আর্দ্রতা ৩০-৫০ শতাংশে রাখতে ডিহিউমিডিফায়ার ব্যবহার, HEPA ফিল্টারযুক্ত ভ্যাকুয়াম দিয়ে পরিষ্কার করা এবং ছত্রাক দেখা গেলে দ্রুত পরিষ্কার করা।

পাশাপাশি খাবারের উচ্ছিষ্ট খোলা না রাখা, পানি লিক হলে দ্রুত মেরামত করা এবং পোষা প্রাণীকে শোবার ঘরে কম ঢুকতে দেওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।

চিকিৎসকদের মতে, শীতকালীন অ্যালার্জির লক্ষণ অবহেলা না করে সঠিক চিকিৎসা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিলে এই মৌসুমেও সুস্থ থাকা সম্ভব। তবে কয়েক সপ্তাহ পার হওয়ার পরও যদি উপসর্গ না কমে বা দৈনন্দিন কাজে সমস্যা সৃষ্টি করে, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

সূত্র: Healthline

 

এনএফ৭১/এসআর



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top