দাকোপে বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত চার গ্রাম, ভেসে গেল ঘরবাড়ি ও ফসলের খেত
এস কে বাপ্পি, খুলনা প্রতিনিধি | প্রকাশিত: ১২ অক্টোবর ২০২৫, ১২:১৭

খুলনার দাকোপে জোয়ারের তোড়ে বেড়িবাঁধ ভেঙে তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানির নিচে তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি, ফসলের খেত, মৎস্য ঘের ও পুকুর। স্থানীয়রা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অবহেলাকে দায়ী করছেন এই ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্য।
জানা গেছে, মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকী নদীর জোয়ারের পানির চাপে দাকোপের ৩০ নম্বর পোল্ডারের আওতাধীন তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের বটবুনিয়া হরিসভা মন্দির এলাকার আনুমানিক দুই শত ফুট ওয়াপদা বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়।
বাঁধ ভাঙার পর মুহূর্তেই প্লাবিত হয় ইউনিয়নের উত্তর কামিনীবাসিয়া, বটবুনিয়া, নিশানখালী ও আড়াখালী গ্রাম। এতে ভেসে গেছে শতাধিক ঘরবাড়ি, অসংখ্য মৎস্য ঘের, পুকুর এবং প্রায় ৩ হাজার বিঘা জমির আমন ফসলের খেত।
তিলডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন গাজী আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “বুধবারের মধ্যে বাঁধ মেরামত করতে না পারলে দক্ষিণ কামিনীবাসিয়া, ভাদলা বুনিয়া, মশামারী, গড়খালী ও কাঁকড়া বুনিয়াসহ পুরো ইউনিয়নই প্লাবিত হবে।”
তিনি আরও বলেন, “ভোরবেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড যদি আরও তৎপর হয়ে দুটো বড় বালির টিউব দিয়ে চাপ দিত, তাহলে বাঁধটি আটকানো সম্ভব হতো। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে।”
ঘটনাস্থলে গিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের দেখা গেলেও কোনো উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি। তবে দাকোপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসমত হোসেন, থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম ও স্থানীয় সেনা ক্যাম্প কমান্ডার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ইউএনও আসমত হোসেন বলেন, “আশা করছি রাতের মধ্যেই বাঁধটি আটকাতে পারব। বালির টিউবসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড মেরামত কাজের সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে।”
তিনি জানান, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মধ্যে তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার (চিড়া, গুড়) এবং রান্নার জন্য চাল, ডাল, তেলসহ অন্যান্য ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। বিকাল নাগাদ বাকি পরিবারগুলোকেও সহায়তা দেওয়া হবে।
এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, বেড়িবাঁধের ওই অংশটি দীর্ঘদিন ধরেই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। সময়মতো পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজ না করায় আজ এমন বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে পুরো এলাকা।
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।