দুই-একজন উপদেষ্টা গোপনে ষড়যন্ত্র করছে: মিয়া গোলাম পরওয়ার

উপজেলা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত ছাত্র-যুব সমাবেশে দলের সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য মিয়া গোলাম পরওয়ার অভিযোগ করেছেন যে নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে সরকারের কিছু উপদেষ্টার মধ্যে অস্থিরতা বাড়ছে এবং দু-একজন উপদেষ্টা একটি নির্দিষ্ট দলকে ক্ষমতায় আনার জন্য গোপনে ষড়যন্ত্র করছেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “ছাত্রজনতা অতীতে বিপ্লব করেছে। এবার আমরা সুশাসন, সুবিচার ও ইসলামী মূল্যবোধের পক্ষে বিপ্লব করতে চাই ভোটের মাধ্যমে। আমরা সরকারের প্রতি আস্থা রাখতে চাই—কারণ এই সরকার কোনো রাজনৈতিক দলের নয়, এমনটাই বলা হয়েছে। কিন্তু এখন দেখছি নির্বাচন যতই কাছে আসে, প্রশাসন ও উপদেষ্টাদের মাঝে অস্থিরতা দেখা দিচ্ছে।”

পরওয়ার আরও অভিযোগ করেন যে প্রশাসনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা কর্মকর্তা (ওসি, ইউএনও, ডিসি, সচিবালয়ের আমলা) মাঝে মাঝে একটি বিশেষ দলের চাপে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে এবং নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে পারছে না। তিনি বলেন, “আমরা কখনো বলিনি আমাদের কথা শুনতে হবে। আমরা বলি—আপনারা ন্যায়, সত্য ও ইনসাফের পথে থাকুন।”

তিনি নির্বাচনকে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ হিসেবে নিশ্চিত করার অনুরোধ জানান। তাঁর ভাষ্য, “খেলার মাঠ একপাশে উঁচু আর একপাশে নিচু হলে খেলা চলে না। ভোটের ক্ষেত্রেও একেই বলি। গোপনে কোনো দলের সঙ্গে বৈঠক, সাহায্য বিতরণ বা পক্ষপাতিত্ব চললে সেটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হতে পারে না। সরকারের সচিবালয় ও প্রশাসনের মধ্যে এসব আচরণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যা উদ্বেগজনক।”

মিয়া গোলাম পরওয়ার দাবি করেন, “দু-একজন উপদেষ্টা দেখা যাচ্ছে একটি দলের সঙ্গে গোপন সম্পর্ক রেখে ভবিষ্যৎ নির্বাচনে তাদের ক্ষমতায় আনতে ষড়যন্ত্র করছেন। অথচ প্রধান উপদেষ্টা আমাদের বলেছেন—তিনি নিরপেক্ষ থাকবেন। আমরা চাই, তিনি তার অবস্থানে অবিচল থাকুন, দাঁড়িপাল্লার মতো সোজা—কোনো দিকেই যেন হেলে না পড়েন।”

জামায়াতে ইসলামীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “জনগণ যদি আমাদের সুশাসন, সুবিচার এবং আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠার জন্য ভোট দেন, আমরা রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে গেলে শাসক হবো না, সেবক হবো। আমাদের দলের আমির বারবার এ কথা বলেছেন।”

তিনি মন্তব্য করেন যে ২৪ মার্চের (চব্বিশের) গণআন্দোলন ছিল ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার যুদ্ধ; এখন তাদের “দ্বিতীয় যুদ্ধ” দুর্নীতির বিরুদ্ধে হবে। এই যুদ্ধে জয়ী হতে হলে ছাত্র-জনতাকে ইসলামী শক্তিকে সংসদে পাঠাতে হবে বলে পরওয়ার সমাবেশে উল্লেখ করেন।