কী ঘটেছিল জেমসের কনসার্টে, উঠে এলো উপস্থাপকের বর্ণনায়
বিনোদন ডেস্ক | প্রকাশিত: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬:৪১
ফরিদপুর জিলা স্কুলের ১৮৫তম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানের সমাপনী দিনে বহিরাগতদের ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও বিশৃঙ্খলার মুখে দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড তারকা নগর বাউল জেমসের কনসার্ট পণ্ড হয়ে গেছে। এ ঘটনায় আয়োজক কমিটির আহ্বায়কসহ অন্তত ২৫–৩০ জন আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে স্কুল প্রাঙ্গণে জেমসের সংগীত পরিবেশনের কথা ছিল। তবে কনসার্ট শুরুর আগেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
ঘটনাটি কনসার্টের উপস্থাপক শ্রাবণ্য তৌহিদার চোখের সামনেই ঘটে। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন তিনি। ফেসবুকে শ্রাবণ্য লেখেন, “কথা ছিল ফরিদপুর জেলা স্কুলের ১৮৫ বর্ষপূর্তির গৌরবময় উদযাপনের। অথচ তা রূপ নিল এক যন্ত্রণাদায়ক অভিজ্ঞতায়। একটি ওপেন এয়ার কনসার্টের জন্য মানুষের তুমুল উত্তেজনার শেষ হলো বিশৃঙ্খলা ও ভয়ের মধ্যে।”
তিনি আরও লেখেন, “আমি তখন র্যাফেল ড্র পরিচালনা করছিলাম। নাগর বাউল জেমস পারফর্ম করতে যাচ্ছিলেন। ঠিক সেই মুহূর্তে আমার সামনে একটি বড় পাথর এসে পড়ে। মুহূর্তেই সব বদলে যায়। প্রায় ১৫ হাজার মানুষ ভেন্যুতে প্রবেশের চেষ্টা করছিল। এতে অন্তত ১৫ জন শিক্ষার্থী মাথায় আঘাত পায়। ভয় আর আতঙ্কের মধ্যে তিন ঘণ্টার বেশি সময় সবাই দাঁড়িয়ে ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিতে হয়।”
পারিশ্রমিক প্রসঙ্গে শ্রাবণ্য তৌহিদা লেখেন, “আমি পারিশ্রমিক পেয়েছি, জেমস ভাইও পেয়েছেন। কিন্তু অর্থ দিয়ে মানসিক যন্ত্রণা বা হতাশা দূর করা যায় না। যারা আহত হয়েছেন, তাদের কষ্ট কিংবা হাজার হাজার দর্শকের ভেঙে যাওয়া আশা—এর কোনো ক্ষতিপূরণ নেই।”
প্রত্যক্ষদর্শী ও আয়োজক সূত্রে জানা যায়, পুনর্মিলনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি শুধুমাত্র নিবন্ধিত প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত ছিল। তবে জেমসের কনসার্টের খবরে কয়েক হাজার অনিবন্ধিত বহিরাগত দর্শক সেখানে জড়ো হন। ভেতরে ঢুকতে না দেওয়ায় তারা পাশের মুজিব সড়কে অবস্থান নেন।
পরিস্থিতি সামাল দিতে আয়োজকদের পক্ষ থেকে বাইরে দুটি বড় প্রজেক্টর বসিয়ে কনসার্ট দেখার ব্যবস্থা করা হয়। তাতেও সন্তুষ্ট না হয়ে বহিরাগতরা দেয়াল টপকে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। এতে বাধা দিলে তারা স্কুল প্রাঙ্গণের দর্শক ও মঞ্চ লক্ষ্য করে একের পর এক ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা প্রতিরোধ গড়ে তুললে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
পরিস্থিতির অবনতি হলে রাত ১০টার দিকে আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ডা. মুস্তাফিজুর রহমান শামীম মঞ্চ থেকে ঘোষণা দেন, উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে জেমসের কনসার্ট বাতিল করা হয়েছে। পরে বিক্ষুব্ধরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে বাধ্য হয়।
ঘটনাটি ঘিরে স্থানীয়ভাবে ব্যাপক আলোচনা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নিরাপত্তা ও আয়োজনে অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন মহল।
এনএফ৭১/ওতু
বিষয়:

পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।