বিশ্বব্যাংক
২০৩০ সালের মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হবে বাংলাদেশ
স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশিত: ২৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:১৭
জনঘনত্ব, তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে দক্ষিণ এশিয়া বিশ্বে সবচেয়ে বেশি জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলগুলোর একটি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। আর এই অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ—এমনটাই জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের নতুন প্রতিবেদন ‘ঝুঁকি থেকে স্থিতিস্থাপকতা: দক্ষিণ এশিয়ায় মানুষ ও প্রতিষ্ঠানের অভিযোজনে সহায়তা’–এ জানানো হয়, ২০৩০ সালের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ চরম তাপমাত্রার ঝুঁকিতে পড়বে, পাশাপাশি বড় অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে ভয়াবহ বন্যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, উপকূলীয় এলাকায় পানি ও মাটির লবণাক্ততা দ্রুত বাড়ছে, যা বাংলাদেশের লাখো মানুষের জীবন-জীবিকাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সবচেয়ে তীব্রভাবে দেখা দেবে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলোতে।
বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, আগামী ১০ বছরের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার তিন-চতুর্থাংশের বেশি পরিবার ও প্রতিষ্ঠান জলবায়ুজনিত ধাক্কায় পড়বে।
এরই মধ্যে ৬৩% প্রতিষ্ঠান, ৮০% পরিবার, কিছু অভিযোজনমূলক পদক্ষেপ নিলেও বেশিরভাগই কম খরচের সাধারণ সমাধানে সীমাবদ্ধ। উন্নত প্রযুক্তি বা সরকারি অবকাঠামো ব্যবহারের হার কম।
বাংলাদেশের ২৫০টি উপকূলীয় গ্রামে পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, ৫৭% পরিবার দুর্যোগ-সুরক্ষা অবকাঠামোর ঘাটতিকে প্রধান চ্যালেঞ্জ বলেছে, ৫৬% পরিবার অভিযোজনের জন্য সীমিত আর্থিক সক্ষমতাকে বড় বাধা হিসেবে দেখেছে
বিশ্বব্যাংক বলেছে, এ সংকট শুধু পরিবেশগত নয়, বরং মানবিকও কারণ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দরিদ্র ও নিম্ন-আয়ের পরিবারগুলো।
বাঁধ নির্মাণ, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র ও সময়োপযোগী সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি বাংলাদেশে ব্যাপক জীবনরক্ষা করেছে—উদাহরণ টেনে জানায় প্রতিষ্ঠানটি। তবে সরকারি আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে একটি সমন্বিত নীতি কাঠামোর প্রয়োজন।
বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটান বিভাগের ডিরেক্টর জ্যঁ পেসমে বলেন “বাংলাদেশের জলবায়ু সহনশীলতা বারবার পরীক্ষিত হচ্ছে। ঝুঁকি দ্রুত বাড়ছে, তাই আরও কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি। আগাম সতর্কবার্তা, সামাজিক সুরক্ষা, জলবায়ু-স্মার্ট কৃষি ও ঝুঁকিভিত্তিক অর্থায়ন বাড়াতে হবে।”
প্রতিবেদনের সহ-লেখক ও প্রধান অর্থনীতিবিদ সিদ্ধার্থ শর্মা বলেন “অভিযোজনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একদিকে উদাহরণ, অন্যদিকে এক গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার ক্ষেত্রও।”
বিষয়:

পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।